শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

সুইডেনের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ে ২৮ বছর পর সেমিতে ইংল্যান্ড



বিশ্বকাপের মূল পর্ব ও বাছাই পর্ব মিলিয়ে সুইডেনকে কখনোই হারাতে পারেনি ইংল্যান্ড। তবে এবার পেরেছে। হারিয়েছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। ইংলিশদের এই জয় এনে দিয়েছেন দুই তরুণ হ্যারি ম্যাগুয়ার ও ডেলে আলি। তাঁদের দুজনের দুর্দান্ত হেড থেকে পাওয়া গোলের উপর ভর করে ২৮ বছর পর ইংল্যান্ড পৌঁছেছে সেমিফাইনালে।

সেমিফাইনালে ওঠার পর ইংলিশ খেলোয়াড়দের উল্লাস। ছবি: এএফপি

হ্যারি কেইন-ডেলে আলিদের এই ইংল্যান্ড কিন্তু ৫২ বছর আগে ববি চার্লটন-ববি মুরদের দেখানো পথেই হাঁটছে। সুইডেনকে হারিয়ে গতকাল কেইনরা যে সেমিফাইনালে উঠলেন, শুধু সে কারণেই নয়। পরিসংখ্যানও বলছে, ববি মুরদের সোনালি ’৬৬ ফিরিয়ে আনার পথেই হাঁটছেন কেইনরা।

ইংল্যান্ডের ঘরে ওই একটাই বিশ্বকাপের ট্রফি। ১৯৬৬ সালের সেই টুর্নামেন্টে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্বাগতিকেরা। সেই পথে তারা করেছিল ১১ গোল। এবার সেমিফাইনালে ওঠার পথেই ১১ গোল করেছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। বিশ্বকাপে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার এক টুর্নামেন্টে ন্যূনতম ১০ গোল করল ইংলিশরা। প্রথমবার ’৬৬-তে, তারপর এবার। প্রথমবার তারা ট্রফি জিতেছিল, তাহলে কি এবারও?

ইংলিশ সমর্থকদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস। ছবি : গেটি ইমেজ

ইংলিশ–সমর্থকেরা কিন্তু এবার ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। কেইনদের ম্যাচ থাকলেই স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে সুর ওঠে ‘ইটস কামিং হোম’ কোরাসের। এটুকু ইংল্যান্ড ফুটবল দলের জন্য ‘থ্রি লায়নস’ গানের চরণ। ১৯৯৬ ইউরো টুর্নামেন্টে সাউথগেটদের সৌভাগ্য কামনা করে গানটি বেঁধেছিল লাইটনিংস সিডস ব্যান্ড। ২২ বছর পর সেই গানের সার্থকতা প্রমাণের পথে রয়েছেন কেইনরা।

ম্যাগুয়ার এর গোল উদযাপন। সাথে জন স্টোন্স ও হ্যারি কেইন। ছবি : শাটারস্টক

সর্বশেষ ১৯৯০ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল গ্যারি লিনেকারদের ইংল্যান্ড। ২৮ বছর পর সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনার কাজটুকু সেরেছেন দুই তরুণ হ্যারি ম্যাগুয়ার (২৫ বছর) ও ডেলে আলি (২২ বছর)। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় গোলটি করে আলি কিন্তু উঠে এসেছেন ইংলিশ ইতিহাসে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে মাইকেল ওয়েনের পর ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় (২২ বছর ৮৭ দিন) সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করলেন আলি।

ডেলে আলির গোল উদযাপন। ছবি : গেটি ইমেজ

সুইডেনের বিপক্ষে এ ম্যাচে দুটি গোলই এসেছে হেড থেকে। এই বিশ্বকাপে বাকি দলগুলোর চেয়ে ইংল্যান্ড মাথা দিয়েই বেশি গোল করেছে। ১১ গোলের মধ্যে ৫টি গোলই তাঁরা করেছে হেড থেকে। ‘সেটপিস’ অর্থাৎ ‘ডেড বল’ পরিস্থিতি থেকে এসেছে ৮ গোল। যা ইংল্যান্ডের করা মোট গোলের ৮০ শতাংশ। এবং যেকোনো দলের থেকে তারা দুটি গোল বেশি করেছে ‘সেটপিস’ থেকে। ফ্রিকিক কিংবা কর্নারে এই ইংল্যান্ড কতটুকু ভয়ংকর, তা এই পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার ধারণা পেয়ে যাবে তাদের প্রতিপক্ষ দল।

সতীর্থদের কাঁধে কাপ হাতে ১৯৬৬ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ববি মুর। ছবি : এপি

কেইনদের ’৬৬ ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিত দিচ্ছে আরও একটি পরিসংখ্যান। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছিল ইংল্যান্ড। তারপর এই ৫২ বছরের মধ্যে (এবারের আগে) তাঁরা অন্তত পাঁচবার কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। কিন্তু শেষ আটের এই মঞ্চে কোনো ম্যাচেই তাঁরা নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে পারেনি। যে কাজটা হলো এবার। সুইডেনের বিপক্ষে কোনো গোল হজম করেনি ইংলিশ রক্ষণ। ইংলিশদের এ পর্যন্ত ১১ গোল আর শেষ আটে কোনো গোল হজম না করার ইঙ্গিতটা কোন দিকে যাচ্ছে, সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন…‘ইটস কামিং হোম’!

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!