বালাগঞ্জে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন

চলতি মৌসুমে বালাগঞ্জ কৃষি অঞ্চলে আমন ও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ২৬ টাকা কেজি দরে ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে। বালাগঞ্জ খাদ্য গুদামে ১ জুলাই থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চলেছে এই কর্মসূচি। বালাগঞ্জ কৃষি অফিস থেকে সময় মতো তালিকা না পাওয়ার জন্য সরকারি তারিখ অনুযায়ী ধান নেওয়া হয়নি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে ৬০৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। দুই ধাপে ৬০৩ জন কৃষকের তালিকা দেওয়া হয়েছে। উৎপাদন খরচ থেকে উৎপাদিত ফসলের বিক্রয় মূল্য কম হওয়ায় কৃষকরা হতাশ ছিলেন। এজন্য সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়। এজন্য কৃষকরা যেমন লাভবান হচ্ছেন তেমনি তারা উৎপাদন করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

জানা যায়, কৃষি অফিস থেকে তালিকা দুই ধাপে দেওয়ার কারনে কৃষকরা অনেক ভোগান্তির মধ্যে পড়েছিলেন। অনেক কৃষকই ধান দিতে এসে তালিকায় নাম না থাকায় দিতে পারেননি। কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এতে কৃষকরা অনেক ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। বালাগঞ্জ বাজার বণিক সমতির সভাপতি মোঃ জুনেদ মিয়া বলেন, কৃষিকার্ড সহ কৃষকদের তালিকা প্রণয়নে সচ্ছতা আনলে প্রকৃত কৃষকরাই উপকৃত হবে। আমি উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকেই যেন ধান চাল সংগ্রহ হয় তাহলে সরকারের উদ্যোগ সফল হবে।

বালাগঞ্জ উপজেলায় দুই দাফে কৃষি কার্ড অনুযায়ী ৬০৩ জন কৃষকের তালিকা তৈরী করে বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা । লক্ষমাত্রা ছিল ৬০৩ মেট্রিক টন ধান এর মধ্যে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৫০৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

সরেজমিনে গত ৩১ আগষ্ট ধান সংগ্রহে গিয়ে দেখা যায় বালাগঞ্জ খাদ্য গুদামে কৃষকদের উপচে পড়া ভিড় । এসময় ধান দিতে আসা উপজেলার কৃষকদের সাথে আলাপ কালে তারা জানান, বালাগঞ্জের চানপুর গ্রামের রাবেল আহমদ, মোবারক পুরের আজমান খান, বোয়ালজুড়ের সেলিম আহমদ, দেওয়ানবাজরের কলুমা গ্রামের আলকাছ আলী, পুর্বপৈলনপুরের ভাটপাড়া গালিমপুরের দোলন দেবনাথ, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক মেম্বার রনজিত বৈদ্য, সাবেক মেম্বার বশির মিয়া, সুজিবুর রহমান সহ সকলের সাথে আলাপ কালে তারা জানান তালিকায় তাদের নাম রয়েছে সে অনুযায়ী তারা জনে ১ টন করে ধান প্রধান করেছেন।

তারা বলেন সম্পন্ন রুপে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী তারা ব্যাংক এ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছি । এজন্য কাউকে কোন টাকা পয়সা দিতে হয়নি। বালাগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, ১লা জুলাই তালিকা পাই কৃষকদের তালিকা পেতে দেরী হয়েছে। এছাড়া দু দফায় তালিকা দেওয়া হয়। তাছাড়া বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারনে এ সমস্যা হয়েছে। বালাগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিউটন চক্রবর্ত্তী বলেন, কৃষি অফিসের তালিকা অনুযায়ী খাদ্যগুদামে শতভাগ কৃষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে তাদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে । টাকা গুলো ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করা এবং প্রশাসনের সার্বিক সহযেগীতায় ৫০৩ টন ধান সংগ্রহ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা (অঃদাঃ) কৃষিবিদ রমজান আলী বলেন, আমরা দুদাফে তালিকা প্রেরন করেছি সত্যি। প্রথম দাফে ২২৬জন ও দ্বিতীয় দাফে ৩৭৭জন মোট ৬০৩জন কৃষকের কৃষি কার্ড অনুযায়ী তালিকা তৈরী করা হয়। যথাযথ সময়েই তালিকা প্রেরন করা হয়েছে। বন্যার কারনে পুরো লক্ষমাত্রা পৌছেনি।

বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ধান চাল সংগ্রহ কমিটির সভাপতি মোঃ নাজমুস সাকিব বলেন, বালাগঞ্জে বন্যা ও অতি বৃষ্টির কারনে ধানের আর্দ্রতা ১৪% না থাকার ফলে এ ধান সংগ্রহে বিলম্ব হয়েছে। ৫০৩ টন ধান বালাগঞ্জ প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ ও বাকী ১০০ টন জেলার মাধ্যমে সমন্বয় করে লক্ষমাত্রা অর্জন করা হয়েছে।

শেয়ার করুন: