শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদ গ্রেফতার!



অর্থ আত্মসাতসহ প্রতারণার অভিযোগে এবং করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে র্যাব।

আজ বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত সপ্তাহের সোমবার থেকে প্রকাশ্যে আসে সাহেদের পৃষ্ঠপোষকতায় রিজেন্ট হাসপাতালের একের পর এক অনিয়ম।

র্যাবের অভিযানে জানা গেছে, গত ২৩ মের পর করোনার কোনো নমুনা পরীক্ষা করেনি রিজেন্ট। বরং নমুনা ফেলে দিয়ে নিজেদের কম্পিউটারের মাধ্যমে ভুয়া ইউনিক আইডি তৈরি করে মনগড়া রিপোর্ট দিতো রিজেন্ট। পাশাপাশি রিপোর্টে জালিয়াতি করে আইইডিসিআর ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন- নিপসমের প্যাড-সিল ব্যবহার করত তারা।

করোনা টেস্টে অননুমোদিত কিট

অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা টেস্টের অননুমোদিত কিট পেয়েছে র্যাব। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিংবা বাংলাদেশ সরকার যে কিট ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি, সেটি দিয়েই টেস্ট করছিল রিজেন্ট।

বিনামূল্যের পরীক্ষা করার জন্য দুই দফায় টাকা নিত রিজেন্ট

সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী কোভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে রিজেন্টে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহের কোনো টাকা নেয়ার কথা না। তবে টেস্টে প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা করে নিত তারা। যাদের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট দেওয়া হতো, তাদের কাছ থেকে ফের পরীক্ষার জন্য আরও এক হাজার টাকা নেয়ার প্রমাণ পেয়েছে র্যাব।

রোগী থেকেও টাকা নিয়েছে, সরকার থেকেও ক্ষতিপূরণ চেয়েছে

করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে করোনা রোগীদের কাছ থেকে কোনো ফি নেয়ার কথা না। তবে র্যাব অভিযানে গিয়ে দেখেছে, রিজেন্ট রোগী প্রতি দেড়লাখ, দুইলাখ ও সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা বিল আদায় করত। পাশাপাশি রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছে এই বাবদ সরকারের কাছে এক কোটি ৯৬ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ বিল জমা দিয়েছে রিজেন্ট হাসপাতাল। অধিদফতর হয়ে সেই বিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে প্রায় অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় ছিল। তবে এখনও কোনও অর্থ ছাড় হয়নি।

অপরাধ ধামাচাপা দিতে অভিনব কৌশল

গত কয়েকদিন ধরে এই অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসতে থাকলে নিজেদের অপরাধ ঢাকতে নতুন কৌশল নেয় রিজেন্ট। অভিনব এই কৌশলের বিষয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্টের বিরুদ্ধে যখন সবাই অনিয়মের অভিযোগ করছিল তখন রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ এটাকে গোপন করার জন্য গত পরশু একটা প্রেস কনফারেন্স করে। সেখানে তারা বলে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসবে দায়ী না। রিজেন্ট হাসপাতালের ৩ জন কর্মী এর সঙ্গে দায়ী।

সারোয়ার আলম বলেন, নিজেদের নিরপরাধ প্রমাণ করতে গতকালকে (রোববার) ১ মাস ৭ দিন আগের ব্যাকডেট দিয়ে ৩ কর্মচারীকে বরখাস্ত করে রিজেন্ট। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটা সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছে রিজেন্ট। অথচ আমরা দেখলাম ওই ৩ কর্মী গত দেড়মাস অফিস করেছে, হাজিরা দিয়েছে।

চেয়ারম্যানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

করোনা আক্রান্ত রোগীদের আবেগ নিয়ে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ করায় গ্রেফতার হওয়া রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলা করে র্যাব।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!