সিলেটে করোনার ভুয়া রিপোর্ট ও নন কভিড সার্টিফিকেট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। একই সাথে র্যাব এর ভ্রাম্যমান আদালত তাকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন এবং ৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গ্রেফতারকৃত চিকিৎসকের নাম ডা. এইচ, এম. শাহ আলম। তিনি নগরীর মধুশহীদে মেডিনোভা সার্ভিসেস লিমিটেড এর নীচতলায় চেম্বারে রোগী দেখেন।
আজ রোববার (১৯জুলাই) সন্ধ্যায় র্যাব -৯ এর একটি ভ্রাম্যমান টিম অভিযান চালিয়ে ডা. শাহ আলমকে মেডিনোভার চেম্বার থেকেই আটক করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায়।
গ্রেফতারকৃত চিকিৎসক শাহ আলম করোনাভাইরাস আক্রান্ত। গত ১৪ জুলাই তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তদুপরি তিনি চেম্বারে রোগী দেখছেন।
জানা গেছে, নিজেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ডাক্তারের পরিচয় দিয়ে বিদেশগামীদের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা আদায় করে নন-কোভিড প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছিলেন এই চিকিৎসক। প্রতিটি ভুয়া সার্টিফিকেট বাবদ ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি।
ওই সার্টিফিকেটে ডা. শাহ আলম উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে উপসর্গহীন রোগীদের করোনা পরীক্ষার সুযোগ নেই।
এছাড়া নিজেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক বলেও উল্লেখ করেছেন। যদিও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপ-পরিচালক হিমাংশু লাল রায় জানিয়েছেন, এ নামে কোনো চিকিৎসক তাদের ওখানে নেই। প্যাডে নিজেকে ওসমানী মেডিকেলের চিকিৎসক লিখে থাকলে তিনি রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
এছাড়া ডা. শাহ আলমের বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ, তিনি নিজেও একজন করোনা আক্রান্ত রোগী। এরপরও চেম্বারে বসে রোগী দেখেছেন।
ডা. শাহ আলম থেকে করোনা ভুয়া সার্টিফিকেট নেয়া ভুক্তোভোগী প্রবাসী দম্পতির ভাতিজা আনোয়ার হোসেন জানান, ১০ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেসে গেলে তার চাচা-চাচীর কাউকেই পর্যবেক্ষণ না করেই নন-কোভিড সার্টিফিকেট দেন ডা. শাহ আলম।
তিনি জানান, এই সার্টিফিকেটে কাজ না হওয়ায় ঢাকার একটি বেসরকারি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে নমুনা দিয়ে পরীক্ষা শেষে সনদ নিয়ে ১২ জুলাই এমিরেটস এয়ারলাইন্সে করে যুক্তরাষ্ট্রে যান এই দম্পতি।
এমন সব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে চিকিৎসক শাহ আলম বলেছেন, আমি ভুল করেছি। এমন ভুল আর হবে না। এমন নন-কোভিড সার্টিফিকেট দেয়া ঠিক হয়নি আমার। আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
এ বিষয়ে মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসের সিলেটের মহাব্যবস্থাপক এম এ মতিন মাসুক বলেন, আমাদের বিপনন কর্মকর্তারা ডা. এ এইচ এম শাহ আলমকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে কাজ করতে দেখেছেন। তাই তার কাগজপত্র আর যাচাই করা হয়নি। আর ১৬ জুলাই করোনা সংক্রমনের কথা অবগত হলেই এই চিকিৎসককে চেম্বারে আসতে নিষেধ করে দিই আমরা।