ধর্ষক জমিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ধর্ষণে জন্ম নেওয়া সন্তানের ব্যয়ভারের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে বহনের নির্দেশ

বরিশাল নগরীর মতাসার এলাকায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের দায়ে মজিবর রহমান ওরফে জমির ফকিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছর দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার বিকেলে আসামির উপস্থিতিতে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ এই রায় ঘোষণা করেন।

একই সাথে ধর্ষণের ফলে ওই গৃহবধূর গর্ভে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তার ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহন করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। দণ্ডপ্রাপ্ত জমির ফকির নগরীর মতাসার এলাকার আব্দুল মান্নান ফকিরের ছেলে।

ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানান, ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামী চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন। তবে ওই গৃহবধূ নগরীর মতাসার এলাকার বাসায় একা থাকেন। এই সুযোগে ২০০৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে ওই বাসায় প্রবেশ করে গৃহবধূকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন প্রতিবেশী মজিবর রহমান। বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যার হুমকি দেয় মজিবর।

এদিকে, ধর্ষণের ফলে ওই গৃহবধূ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ ঘটনা জানাজানি হলে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূ মজিবর রহমান ওরফে জমির ফকিরকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিলে তিনি ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া সন্তানের প্রমাণ পাওয়া যাবে না উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন জমা দেন। একই বছর ১৮ নভেম্বর ওই গৃহবধূ একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। পরে কন্যা সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা শেষে মজিবরকেই জন্ম নেয়া সন্তানের বায়োলজিক্যাল ফাদার উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেন ফরেনসিক চিকিৎসক তানিয়া হোসেন।

এতে ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল মামলাটি আমলে নিয়ে মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে। ট্রাইব্যুনাল ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ওই রায় দেন।

শেয়ার করুন: