আজ ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস

আজ ১১ই ডিসেম্বর, ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ঐ দিন পাক হানাদার বাহিনী ফেঞ্চুগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ফলে ফেঞ্চুগঞ্জ শত্রু মুক্ত হয়। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর শেষ পর্যন্ত পাক বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু যুদ্ধকালীন সময় পাকবাহিনী ফেঞ্চুগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নিরিহ মানুষের উপর যে অমানবিক নির্যাতন করে, সেই নির্যাতনের বিভীষিকাময়তা কখনো বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাবার নয়।

১৯৭১ সালের এপ্রিলের প্রথম দিকে দল বেঁধে পাকবাহিনী ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায় প্রবেশ করে তাদের অবস্থান নেয় ফেঞ্চুগঞ্জ পশ্চিম বাজারে। ‘কাইয়ার গুদামে’ তারা তাদের ক্যাম্প থেকে ফেঞ্চুগঞ্জের মুক্তি বাহিনীর খোঁজ খবর নিয়ে তাদের পরিবারের উপর নির্বিচার নির্যাতন চালায়। ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে তারা ফেঞ্চুগঞ্জে সড়ক পথ নৌপথ রেল পথ নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারা ফেঞ্চুগঞ্জের মুক্তবাহিনীর বাড়িতে হামলা করে বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেয়।

ফেঞ্চুগঞ্জের ইসলামপুর গ্রামে প্রথম শহীদ হন আসাদুজ্জাম বাচ্চু। পাকবাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে ফেঞ্চুগঞ্জের মানুষ। পাকবাহিনীকে তাড়াতে কুশিয়ারা নদীর উওর পারে ব্যাঙ্কার বানিয়ে অবস্থান নেয় সম্মুখ যুদ্ধের। ফেঞ্চুগঞ্জে পাকবাহিনী ও মুক্তবাহিনীর যুদ্ধ চলতে থাকে। এক সময় পাকবাহিনীর অবস্থা বেগতিক হয়ে যায়। মুক্তির মিছিল আরো উওাল হয়ে উঠে। পাকবাহিনী বের হওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ করে মুক্তবাহিনী। ফেঞ্চুগঞ্জ মিশিন টিলায় তাদের কামান পুড়িয়ে দেয় মুক্তবাহিনী। নদীর উওর পারে সম্মুখ যুদ্ধে অনেক পাকিস্তানি সৈনিক মারা যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে পাকবাহিনী আন্তসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

এদিকে স্বাধীনতার বিজয় মিছিল বের হয়ে যায় রাস্তায় রাস্তায়। বিজয়ের পতাকা হাতে রাস্তায় রাস্তায় মানুষ জড়ো হয়। সবাই বিজয়ের পতাকা উড়াতে থাকে শত্রু মুক্ত ফেঞ্চুগঞ্জের। পরদিন ১১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে উড়ানো হয় জাতীয় পতাকা।

শেয়ার করুন: