ভাতা পান না আজিরুন, সংসার চলে ভিক্ষা করে

আজিরুন

বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, ভিক্ষা ভাতা – কোন ধরণের ভাতা আজো ভাগ্যে জুঠেনি আজিরুনের। তাই অন্যের বাড়িতে থেকে সংসার চলে তাঁর ভিক্ষা করে। সব থেকে ও আজ যেন কোন কিছুই নেই আজিরুনের। এখন রাত কাটান অন্যের আশ্রয়ে থেকে। অথচ এক সময় সবই ছিল আজিরুনের।

আজিরুনের স্বামী মৃত সৈয়েদ শাহ এর বাড়ী এক সময় ছিল বালাগঞ্জ উপজেলার কাইস্তঘাট গ্রামে। পূর্বের সেই বাড়ি ছেড়ে বেশ কয়েক বছর আগে তাঁর স্বামী স্বপরিবারে চলে আসেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বারহাল গ্রামে। সেখানে ও শান্তির মুখ দেখেননি আজিরুন। কুশিয়ারার করাল গ্রাসে বিলিন হয়ে যায় তাদের মাথা গোজার শেষ সম্বলটুকু। তখন থেকে অসহায় হয়ে যান আজিরুন। দিশেহারা স্বামী ইটভাটায় কাজ করতে করতে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন। সৈয়েদ শাহ ও আজিরূনের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে। সেখানে থাকা অবস্তায় ছেলে মেয়েকে বিয়ে দেন। এর পর মারা যান সৈয়েদ শাহ। সৈয়েদ শাহ মারা যাওয়ার প্রায় বার বছর হতে চলেছে। আজিরুন কে দেখার এখন আর কেউ নেই। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে ছেলে ও বিয়ে করে তার সংসার নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। একা আজিরুন এখন অসহায় হয়ে ওয়াবদা কলোনিতে অন্যের বাড়িতে থাকেন। আগে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন। এখন বয়স বাড়ছে শরিল দূর্বল হয়ে গেছে তাই এখন আর কাজ করতে পারেন না। গত পরশু ভিক্ষা করতে আসলে দেখা ও কথা হয় আজিরুনের সাথে।

ভিক্ষা করছেন কেন এমন প্রশ্নে আজিরুন বলেন ভিক্ষা না করলে খাইতাম কেমনে!  আমার স্বামী মারা গেছেন আজ বার বছর হতে চলছে। অথচ আজ পর্যন্ত কেউ আমার খোজ খবর নেয়নি!

আমি বিধবা হয়েছি আজ বার তের বছর হতে চলেছে অথচ আজ পর্যন্ত বিধবা ভাতা বা বয়স্ক ভাতা কোন কিছুই পাইনি। আর কত বয়স হলে বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতা পাব এমন প্রশ্ন তিনি রাখেন প্রতিবেদকের কাছে। তিনি বলেন আজ পর্যন্ত সরকারের কোন সাহায্য তিনি পাননি। না মেম্বার, না মহিলা মেম্বার, না চেয়ারম্যান কারো কাছে একটি টাকা ও তিনি পাননি বলে জানান।

বর্তমানে কোথায় আছেন জানতে চাইলে বলেন, ২ নং মাইজগাও ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে কারো বাড়িতে তিনি আশ্রিত হিসেবে আছেন।

ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করেছে সরকার তা জানেন কি না জানতে চাইলে বলেন, তিনি শুনেছেন কারো মুখে তবে তাকে কেউ বলেনি বা তাঁর নাম সরকারের কাছে কেউ পাঠায়নি বলে জানান।

শেয়ার করুন: