কুশিয়ারায় পানি বেড়েছে : ফেঞ্চুগঞ্জে ২৬ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টি ও উজানের নেমে আসা ঢলে পানি বেড়েছে কুশিয়ারায়। মঙ্গলবার (১৬জুলাই) সন্ধ্যা ৬ টায় কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে (১৭৪) বিপদসীমার ১২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এবারের বন্যায় উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে এ পর্যন্ত ২৬টি গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্ধি হয়েছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেননি বন্যার্তরা।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন থেকে গঠন করা হয়েছে ইউনিয়ন ভিত্তিক ৫টি টিম। ইতোমধ্যে আক্রান্ত ৫০০ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে ৫ মেঃ টন চাল ।

ফেঞ্চুগঞ্জে গত কয়েকদিন থেকে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলে ফুলে উঠেছে কুশিয়ারা নদী আর দেখা দিয়েছে বন্যা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টায় ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে (১৭৪) রেকর্ড হয়েছে ১ দশমিক ২২ সেঃ মিঃ অর্থাৎ কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ১২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টের গেজ পাঠক মো. গিয়াস উদ্দিন মোল্লা। ফলে ক্রমেই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা, মানুষের ঘরবাড়ি ও প্রধান সড়ক ও জনপথ।

ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী মো. বদরুদ্দোজা, মাইজগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুফিয়ানুল করিম চৌধুরী, ঘিলাছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী লেইছ চৌধুরী, উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহমেদ জিলু ও উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. এমরান উদ্দিনের সাথে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে জানা যায়, কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে মানুষের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাচ্ছে। আক্রান্ত গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে-গয়াসী, বাঘমারা, পিঠাইটিকর, ছত্তিশ, উত্তর ইসলামপুর, মনুর টুক (ফেঞ্চুগঞ্জ ইউপি)। বারোহাল, পশ্চিম কর্মধা, পশ্চিম ফরিদপুর, নুরপুর, নওয়াগাঁও, মঈনপুর,মোমিনপুর,গুচ্চগ্রাম (মাইজগাঁও ইউপি)।

চান্দের বান, পূর্ব যুধিষ্টিপুর, খরিয়ার টিলা, মোকামবাজার (ঘিলাছড়া ইউপি)। সোনাপুর,পূর্ব ইলাশপুর, পাঠানচক, খালিপুতা (উত্তর কুশিয়ারা ইউপি)। গয়াসী, ভেলকোনা, সুড়িকান্দি ও শাইলকান্দি (উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউপি)।

এ ব্যাপারে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জসীম উদ্দিন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা ও বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ইউনিয়ন ভিত্তিক ৫টি টিম  গঠন করা হয়েছবলে জানান। উপজেলা প্রশাসনের ৩ জন অফিসার ও ৩ জন সহকারীর সমন্বয়ে প্রতিটি টিমে ৬ জন সদস্য রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

বন্যার সার্বক্ষণিক তথ্যের জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রলরুম। বন্যায় আক্রান্ত ৫০০ পরিবারের মধ্যে ইতিমধ্যে প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি করে ৫ মেঃ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত ৫ মেঃ টন চালসহ বর্তমানে ৬ মেঃ টন চাল মজুদ রয়েছে বলে জানালেন ইউএনও মো. জসীম উদ্দিন।

শেয়ার করুন: