ফেঞ্চুগঞ্জে মৃতের বয়স্ক ভাতার টাকা তোলা নিয়ে চেয়ারম্যানের হয়রানি

ফেঞ্চুগঞ্জে মৃত মহিলার বয়স্ক ভাতার টাকা তোলা নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের হয়রানির খবর পাওয়া গেছে।  ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ৪নং উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আনোয়ারা বেগমের বয়স্ক ভাতা তুলতে গেলে চেয়ারম্যান আহমদ জিলু কর্তৃক হয়রানির শিকার হয়েছেন নমিনি সৈয়দ শিপন আহমদ ও ফেঞ্চুগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সুমন মিয়া।

হয়রানির অভিযোগ সম্পর্কে সৈয়দ সুমন বলেন, গত ২ অক্টোবর ২০১৯ইং তারিখে আমার পরলোকগত মায়ের বয়স্ক ভাতা নমিনি দ্বারা উত্তোলনের জন্য সমাজ সেবা অফিসে যাই এবং অফিস থেকে আমাকে ভাতা উত্তোলনের একটি ফরম প্রদান করা হয়। ফরমটি চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ড সদস্য/সদস্যা দ্বারা সত্যায়িত করার জন্য বলা হয়। তাদের কথামতো আমি ৩ অক্টোবর ২০১৯ইং তারিখে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ জিলুর কাছে আমার মায়ের ভাতার ফরমটি সত্যায়িত করার জন্য পাঠিয়ে থাকি, আমার ছোট ভাই এবং ঐ ভাতার নমিনি সৈয়দ শিপন আহমদকে ইউনিয়ন পরিষদে ফরমটি সত্যায়িত করার জন্য পাঠাইলে সে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৭টা পর্যন্ত তাহার জন্য অপেক্ষা করে। একসময় আহমদ জিলু ইউনিয়ন পরিষদে আসলে আমার ছোট ভাই ঐ কাগজ গুলো তাহার সামনে বাহির করিয়া সত্যায়িত করিয়া দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করিলে তিনি ঐ কাগজ গুলো অস্পষ্ট বলিয়া সাথে সাথে ছুড়ে ফেলে দেন।

তাৎক্ষনিক আমার ছোট ভাই আমাকে ফোন করিয়া জানায় পরে আমি আহমদ জিলুকে ফোনে বিস্তারিত কিছু কথা খুলিয়া বলি যে- দেখুন চেয়ারম্যান সাহেব আমি নিজে উপজেলায় গিয়া সমাজসেবা থেকে ফরম সংগ্রহ করিয়াছি। সমাজসেবা থেকে আমাকে ঐ ফরমটি দেওয়া হয়েছে। লিখাটাও স্পষ্ট আছে, অতটা অস্পষ্ট নয়। আমার ছোট ভাই একজন বিদেশ যাত্রী, বিদেশে যাওয়ার সকল কাজ শেষ। আপনি আমার কাগজটি না আটকিয়ে দয়াকরে সত্যায়িত করে দিয়ে দেন। অতঃপর তিনি বলেন আমাকে চিনেন না! আমি বলি আচ্চা ঠিক আছে আমাকে যদি আপনি না চিনেন তাহলে ২নং ওয়ার্ডের সদস্য রায়হান আহমদকে ফোন করে জেনে পরে না হয় সত্যায়িত করে দেন, কিন্তু কাজ হয়নি তিনি ফিরাইয়া দেন।

তাৎক্ষনিক আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জসিম উদ্দিনকে অবহিত করি। তিনি বিষয়টি দেখতেছেন বলে আমাকে শান্তনা দেন। তবে তিনিও কয়েকদিন পর বদলি হয়ে যান। আমি সমাজসেবা অফিসে গিয়ে এই ফরমটির বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি শুনিয়া খুবই দুঃখ প্রকাশ করেন এবং আমাকে কম্পিউটার থেকে একটি অরিজিনাল কপি প্রিন্ট করিয়া ফরমটি পূরণ করিয়া দেন।

আমি আমার ভাই নমিনী সৈয়দ শিপন আহমদকে আবোরো ইউনিয়ন পরিষদে পাঠাই এবং ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে অবহিত করি। তিনিও অনুরোধ করেছেন বলে আমাকে জানান। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান আহমদ জিলু বলেন, রায়হান মেম্বারের সাইন আগে নিয়ে আসুন আমি পরে সাইন করবো। রায়হান মেম্বারের কাছে গেলে তিনি বলেন আমি সাইন করতে পারব না চেয়ারম্যান ছাড়া। পরে আমি সমাজসেবা অফিসে গিয়ে বিষয়টি বলিলে দায়িত্বরত অফিসার বলেন মহিলা ওয়ার্ড সদস্যার কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিয়ে আসার জন্য। পরে সাথে সাথে ঐদিন মহিলা ওয়ার্ড সদস্যার বাড়িতে আমার ভাইকে পাঠাইলে তিনিও সাইন করতে রাজি হননি। চেয়ারম্যান আহমদ জিলু মানা করেছেন বলে মহিলা সদস্যা সই করতে রাজি হননি বলে জানা যায়। এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আহমেদ জিলুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ অভিযোগের একটি অডিও রেকর্ড এই প্রতিবেদকের কাছে এসেছে। অবশ্য এই অডিও রেকর্ডটি ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও ভাইরাল হয়েছে।

শেয়ার করুন: