লণ্ডনে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ অনুষ্ঠিত

লণ্ডনে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ সেন্টারের চার্চিল হলে এ সামিট অনুষ্ঠিত হয়।

সামিট অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন,”জ্বালানি, নবায়নযোগ্য শক্তি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, সমুদ্র অর্থনীতি, পর্যটন, জ্ঞান ভিত্তিক হাইটেক শিল্প, আইসিটি খাত বিদেশি বিনিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে, ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা এর মধ্যে যে কোনো একটি এবং এর বাইরেও বেছে নিতে পারেন আপনার বিনিয়োগের জন্য।

এছাড়া একক অর্থনৈতিক অঞ্চলেরও প্রস্তাব প্রদান করেন, যেখানে একটি নির্দিষ্ট দেশের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীরা এই ধরনের একটি অঞ্চল নিজেদের জন্য নিতে পারেন।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য প্রায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২৮টি হাইটেক পার্ক বিদেশি ও দেশীয় বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জনসংখ্যার সুফল এবং বিনিয়োগকারীরা যাতে প্রতিযোগিতামূলক দামে দক্ষ মানবসম্পদ পায়- তা নিশ্চিতের ওপর আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন,”আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটিসহ আমাদের সরকারি সংস্থাগুলো আপনাদের জন্য একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। সরকার ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম সম্ভাব্য সুফলের জন্য যথেষ্ট সুযোগ দেবে।যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ,”।

এই রোড শো এর মাধ্যমে গত এক দশকে আর্থ-সামাজিক খাতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তা তুলে ধরা হচ্ছে।রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে সরকারের প্রচেষ্টার কারণে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে ভিশন ২০৪১ পূরণ করে একটি উন্নত দেশ হতে এগিয়ে যাওয়া এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হবে।ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ পিপিপির ভিত্তিতে বিশ্বের ৩১তম বৃহত্তম অর্থনীতি।

দ্রুত নগরায়ন, ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের ব্যবহার, মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ সম্প্রতি বিনিয়োগের একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। যোগাযোগ সংযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল বাজারে পরিণত হয়েছে।দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের সংযোগ স্থাপনকারী রেলপথ বিশিষ্ট পদ্মা সেতু নির্মাণ করছে।বাংলাদেশ খুব শিগগিরই মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করছে। শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বিদ্যুতের উৎপাদন ইতোমধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, ২০৩০ সাল নাগাদ এই উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪০ হাজার মেগাওয়াট, ২০৪১ সাল নাগাদ ৬০ হাজার মেগাওয়াট নির্ধারণ করা হয়েছে।

ক্রমাগত আমাদের আইনি এবং অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে।বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে এবং বিদেশী বিনিয়োগ সংসদের আইন এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির দ্বারা সুরক্ষিত।

বাংলাদেশের আইসিটি খাত এখন ফ্রিলান্স আইটি প্রফেশনালদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৬ লাখ। আইটি খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সঠিক জায়গা।বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আরএমজি রপ্তানিকারক দেশ সবজি উৎপাদনকারী হিসেবে তৃতীয় অবস্থানে অভ্যন্তরীণ মৎস উৎপাদনে তৃতীয় ইন্টারনেট ফ্রিলান্সিংয়ে তৃতীয় এবং ধান উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশ ইন্ভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ উপলক্ষে লন্ডন হয়ে উঠেছে এক খন্ড বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সংগী ও সামিটে যোগ দিতে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ইন্ভেস্টমেন্ট উপদেস্টা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী , উপমন্ত্রী, আইটি উপমন্ত্রী, শীর্ষ ব্যাবসায় নেতা সহ বহু ইন্ভেস্টারগন।এই সামিটে বৃটিশ লর্ড,মন্ত্রী , এমপি সহ বহু ব্যাবসায়ীগন উপস্থিত ছিলেন।

এই সামিটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সফলতা তুলে ধরে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহী করাই মূল লক্ষ্য।

শেয়ার করুন: