বাংলাদেশের হার: সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা

উত্তেজনার পারদে ঠাসা ম্যাচে বাংলাদেশকে দুই উইকেটে হারিয়ে ১৫তম এশিয়া কাপে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কা। টাইগারদের ১৮৩ রানের জবাবে খেলতে নেমে ১৯.২ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লঙ্কানদের পক্ষে কুশল মেন্ডিস ৩৭ বলে ৬০ এবং অধিনায়ক শানাকা ৩৩ বলে ৪৫ রান করেন। যা সিংহলিজদের বড় সংগ্রহের পথ মসৃণ করে। টাইগার বোলারদের মধ্যে ইবাদত হোসেন ৫১ রানে তিন, তাসকিন আহমেদ ২৪ রানে দুই এবং মোস্তাফিজুর রহমান ৩২ রানে এক উইকেট লাভ করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে বাঁচা মরার ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১৮৪ রানের টারগেট দিয়েছিল টাইগাররা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টাইগার ব্যাটারদের মধ্যে মিরাজ ২৬ বলে ৩৮, সাকিব আল হাসান ২২ বলে ২৪, আফিফ হোসেন ২২ বলে ৩৯ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২২ বলে ২৭ রান করেন। শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং তাসকিন আহমেদের ঝড়ো ব্যাটিং টাইগার সমর্থকদের আনন্দ দিয়েছে। সৈকত ৯ বলে ২৪ এবং তাসকিন ৬ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন।

আজ শুক্রবার পাকিস্তান মোকাবেলা করবে হংকংয়ের। এ ম্যাচে যারা জিতবে তারাই সুপার ফোরে যাবে। এশিয়া কাপের পঞ্চম ম্যাচে আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুইটি রেকর্ড গড়েছেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টিতে ৪০০ উইকেট ও ৬ হাজার রানের মাইলফলক ম্পর্শ করেছেন। এর আগে ৬হাজার রানের মাইলফলক ম্পর্শ করেন তামিম ইকবাল।

বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিং করতে পাঠায় লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। বাংলাদেশ এই ম্যাচে তিন পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে। আগের ম্যাচে ওপেন করা এনামুল হক ও মোহাম্মদ নাঈম এবং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে বাদ দিয়েছে একাদশ সাজানো হয়েছে। তাদের পরিবর্তে দলে জায়গা পেয়েছেন সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও ইবাদত হোসেন। এই ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় ইবাদতের। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা দলে আছে একটি পরিবর্তন। মাতিশা পাতিরানার পরিবর্তে এই ম্যাচে অভিষেক হয়েছে ডানহাতি পেসার আসিতা ফার্নান্ডোর।

বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমান। ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী হয়ে ওঠে দুজন। দুই চারের মারে প্রথম ওভার থেকে আসে ১১ রান। তিন বছর পর আন্তজার্তিক ক্রিকেট খেলতে নেমে মাত্র ৬ বল খেলে সাজঘরে ফিরেন সাব্বির। ফার্নান্ডোর করা তৃতীয় ওভারের শেষ বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় কিপারের গ্লাভস। ৬ বলে ৫ রান করেন তিনি। সাব্বিরের বিদায়ের পর সাকিবের সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিতে যেতে থাকেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ফানার্ডোর করা পঞ্চম ওভারে ওঠে ১৮ রান। ৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৪৭ রান। ৬.৫ ওভারে হাসারাঙার বোল্ড হন হন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ২ ছক্কা ও ২ চারে ২৬ বলে ৩৮ রানের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন তিনি। ব্যাট করতে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। করুণারত্নের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ব্যাটার; ৪ রান নিয়ে ফেরেন সাজঘরে।

পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা। মিরাজ-মুশফিকের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে গড়েন দারুণ এক রেকর্ডও। দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ৬০০০ রান ও ৪০০ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন টাইগার অধিনায়ক। এই রেকর্ড গড়ার পর বেশিক্ষণ আর থিতু হতে পারেননি সাকিব। মহেশ থিকসানার বল বুঝে উঠতে না পেরে বোল্ড হয়ে হারান উইকেট। এর আগে ২২ বলে ৩ চারে খেলেন ২৪ রানের ইনিংস। অন্য দিকে মুশফিকুর রহিম তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ১০২ ম্যাচে ১৫০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮৩/৭ (মিরাজ ৩৮, সাব্বির ৫, সাকিব ২৪, মুশফিক ৪, আফিফ ৩৯, মাহমুদউল্লাহ ২৭, মোসাদ্দেক ২৪*, মেহেদি ১, তাসকিন ১১*; মাদুশাঙ্কা ৪-০-২৬-১, থিকশানা ৪-০-২৩-১, আসিথা ৪-০-৫১-১, হাসারাঙ্গা ৪-০-৪১-২, করুনারত্নে ৪-০-৩২-২)।

শ্রীলঙ্কা: ১৯.৩ ওভারে ১৮৪/৮ (নিসানকা ২০, মেন্ডিস ৬০, আসালাঙ্কা ১, গুনাথিলাকা ১১, রাজাপাকসা ২, শানাকা ৪৫, হাসারাঙ্গা ২, করুনারত্নে ১৬, থিকশানা ০*, ফার্নান্দো ১০*; মুস্তাফিজ ৪-০-৩২-১, তাসকিন ৪-০-২৪-২, সাকিব ৪-০-৩১-০, ইবাদত ৪-০-৫১-৩, মেহেদি ৩.৩-০-৩০-১, মিরাজ ১-০-১১-০)।

ফল: শ্রীলঙ্কা ২ উইকেটে জয়ী

ম‍্যান অব দা ম‍্যাচ: কুসল মেন্ডিস

শেয়ার করুন: