ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার কেবল কি হুমকি?

ভ্ল্যাদিমরি পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবেন কী করবেন না তা নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা দু’দিক থেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এটা কেবল একটা হুমকি হতে পারে আবার একজন একনায়ক রাষ্ট্র প্রধানের মাধ্যমে এমন নিষ্ঠুর পরিকল্পনাকে উপেক্ষাও করা যায় না এমন অভিমত ও ব্যক্ত করছেন।  বিশেষ করে রাশিয়ার ইউক্রেন দখলের পর এ পর্যন্ত ১.৮ লাখ রাশিয়ান সেনা নিহত বা আহত হয়েছে বলে পশ্চিমা সামরিক প্রধান দাবি করেছেন এমন একটি খবর সম্প্রতি যখন মেইল অনলাইনসহ অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম প্রকাশ করেছে তখন ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের হুমকি নিয়ে বিশ্লেষকরা নতুন করে আবার আলোচনায় মেতে উঠেছেন।

তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক পরিস্কারভাবে টাইমসকে বলেছেন, পুতিন লাল বোতাম টিপতে প্রস্তুত নন, কারণ রাশিয়া তার পরিণতি বুঝতে পারছে। তাই পশ্চিমাদের অবশ্যই পুতিনের পারমাণবিক হুমকি উপেক্ষা করতে হবে।

জেলেনস্কির এই উপদেষ্টা টাইমসকে আরো বলেন, পরমাণু অস্ত্রের যেকোনো ব্যবহার, এমনকি কৌশলগত ব্যবহার, রাশিয়ার বেশিরভাগ রাজনৈতিক অ্যালিটদের অনিবার্য মৃত্যুর দিকে যে নিয়ে যাবে তা তারা খুব ভালো ভাবে অনুধাবন করেন।

তিনি বলেন, মস্কো এটা ভালোভাবে অনুধাবন করে পরমাণু অস্ত্রের যে কোন ব্যবহার হলে অবিলম্বে তা প্রতিশোধের মুখোমুখি হবে। কারণ অন্যান্য পারমাণবিক শক্তিগুলি খুব স্পষ্টভাবে এমন সতর্কবার্তা ইতোমধ্যে দিয়ে দিয়েছে। আর পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে ট্যাংকসহ অস্ত্র পাঠাতে যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাও ইতোমধ্যে পরিস্কার।

এদিকে, রুশ পার্লামেন্টের স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভোলোদিন বলেছেন, পশ্চিম একটি ভয়াবহ যুদ্ধের ঝুঁকি নিতে যাচ্ছে। কারণ পশ্চিমা দেশগুলি গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছে যে তারা ইউক্রেনে কয়েক ডজন অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক পাঠাবে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

রাশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ – যিনি এখন রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান, তিনি ও এ বলে সতর্ক করেছেন যে, ইউক্রেনে যদি মস্কোর সামরিক বাহিনী পরাজিত হয় তাহলে মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

অবশ্য রাশিয়া সম্প্রতি আটলান্টিক মহাসাগরে তার হাইপারসনিক জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে তার পারমাণবিক ক্ষমতা পরীক্ষা করেছে। তবে এসব পরীক্ষাকে আমলে না নিয়ে জেলেনস্কির উপদেষ্টা টাইমসকে বলেছেন, রাশিয়ার রাজনৈতিক অ্যালিটরা অন্যান্য দেশকে ভয় দেখাতে চায় ও একই সাথে তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের নিশ্চয়তা চায়। তিনি বলেন, আমি ভলোদিন এবং মেদভেদেভের মতো লোকদের মন্তব্যে কম মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেবো। তাদের লক্ষ্য ইউরোপে আতঙ্কের বীজ বপন করা।

তবে রুশ পার্লামেন্টের স্পিকার বা জেলেনস্কির উপদেষ্টাসহ যাই বলুন ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১.৮ লাখ রাশিয়ান সেনা নিহত বা আহত হওয়ার যে দাবি পশ্চিমা সামরিক প্রধান করেছেন তারপর এই যুদ্ধের ভবিষ্যত নিয়ে যে নতুন সমীকরণ বা শঙ্কা সামনে এসেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনকি নিকট ভবিষ্যতে কি ইউক্রেন যুদ্ধের পরিসমাপ্তি হবে তার ও একটা নতুন বিশ্লেষণ আসছে কোন কোন বিশ্লেষকের বিশ্লেষণে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ কীভাবে শেষ হবে তার ওপর যে নির্ভর করছে ইউরোপের ভবিষ্যৎ একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।

 

শেয়ার করুন: