সিলেট শহরের মিরাবাজারের খারপাড়ায় চাঞ্চল্যকর মা-ছেলে খুনের দায়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১মে) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুরে আলম ভূইয়া আলোচিত এই মামলার রায় প্রদান করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ইউসুফ খান মামুন (৩৩)সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা গ্রামের সার্জন খানের পুত্র। অপর আসামি তানিয়া আক্তার (২৬) কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার ঘোষকান্দি গ্রামের বিলাল হোসেনের কন্যা। মামুন ও তানিয়া সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। বর্তমানে দু’জনেই সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে।
গ্রেফতারের পর মামুন ও তানিয়া জোড়া খুনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত বলে অকপটে স্বীকার করে। পরে আদালতে দু’জনেই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, রোকেয়া বেগমের সাথে তানিয়ার পরিচয়ের সূত্র ধরে একসময় গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। সুন্দরী যুবতী তানিয়াকে দিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড করাতেন রোকেয়া। রোকেয়ার কবল থেকে মুক্তি পেতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় তানিয়া। একপর্যায়ে বিশ্বনাথের মামুনের সাথে তানিয়ার পরিচয় ঘটে। এদিকে, তানিয়াকে কক্সবাজারেও পাঠানো হতো। এসব ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে মামুন-তানিয়া দম্পতি মিলে রোকেয়া ও তার পুত্রকে খুন করে বলে ওই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে উঠে আসে।
তদন্ত শেষে পিবিআই সিলেট অফিসের পুলিশ পরিদর্শক দেওয়ান আবুল হোসেন ২০১৯ সালের ১৯ মে ইউসুফ খান মামুন ও তানিয়া আক্তারকে আসামি করে দন্ডবিধির ৩০২/৩২৩/৩০৭/৩৮০/৩৪ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে দু’জনের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর মামলার ২৩ সাক্ষীর মধ্যে পর্যায়ক্রমে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। যুক্তিতর্কসহ আনুষঙ্গিক সকল প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।



