লন্ডনে বিএ এক্সচেঞ্জ ইউকের এজেন্ট রিক্রুটমেন্ট উদ্বোধন ও গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ আরও সহজ ও উৎসাহজনক করতে ব্যাংক এশিয়ার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিএ এক্সচেঞ্জ ইউকের উদ্যোগে এজেন্ট রিক্রুটমেন্ট উদ্বোধন ও গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৫ অক্টোবর (শনিবার) সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের একটি অভিজাত হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ব্যাংক এশিয়ার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং বিএ এক্সচেঞ্জ বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর তানভির মোহাম্মদ আজিম।

গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ও তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দেন বিএ এক্সচেঞ্জ ইউকের সিইও শের মাহমুদ এবং হেড অব অপারেশনস ও মানি লন্ডারিং রিপোর্টিং অফিসার মোহাম্মদ রাহিম। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাংবাদিক ও টিভি প্রেজেন্টার তাইসির মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে বিএ এক্সচেঞ্জ ইউকের নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট রফিক হায়দার, সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতা কে.এম. আবু তাহের চৌধুরী, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট নবাব উদ্দিন, ব্রেন্ট কাউন্সিলের সাবেক মেয়র কাউন্সিলর পারভেজ আহমেদ, কমিউনিটি নেতা আবদুল মতিন চৌধুরী, প্রফেসর মুমিতুর রেজা চৌধুরী, প্রফেসর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খান, শাহজালাল হাউজিং এস্টেট প্রবাসী অ্যাসোসিয়েশন ইউকের সভাপতি শাহ শেরওয়ান মোহাম্মদ কামালী, এবং জকিগঞ্জ এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আবুল হোসেন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবুল কাশেম বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অনুমতি দিয়েছে। এতদিন আমরা শুধু লন্ডন ব্রাঞ্চ থেকে সেবা দিয়েছি, এখন যুক্তরাজ্যের প্রতিটি শহরে এই সেবা পৌঁছে যাবে। এতে প্রবাসীরা সহজে ও দ্রুত রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন।” তিনি আরও জানান, আধুনিক ব্যাংকিং সেবার জন্য ব্যাংক এশিয়া সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে।

বিশেষ অতিথি তানভির মোহাম্মদ আজিম বলেন, “গ্রাহকের আস্থা ও কমিটমেন্ট রক্ষা করে বিএ এক্সচেঞ্জ ইতিমধ্যে সুনাম অর্জন করেছে। সেবাকে আরও সহজ ও আধুনিক করে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব।”

বিএ এক্সচেঞ্জ ইউকের সিইও শের মাহমুদ জানান, “যুক্তরাজ্যের প্রতিটি শহরে আমরা এজেন্ট নিয়োগ করবো। গ্রাহকরা ‘ইন্সট্যান্ট ক্রেডিট’ সুবিধা পাবেন—অর্থাৎ রেমিট্যান্স পাঠানোর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই টাকা বাংলাদেশে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা হবে। আগামী বছর থেকে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে কোনো ফি দিতে হবে না। এছাড়া সপ্তাহের সাত দিন অফিস খোলা রাখার পরিকল্পনা রয়েছে, তবে অ্যাপ সার্ভিস ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে।” তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে বিকাশ ও নগদ মাধ্যমে সরাসরি রেমিট্যান্স পাঠানো যাবে।

হেড অব অপারেশন্স মোহাম্মদ রাহিম বলেন, “আমরা প্রিপেইড ট্রাভেল কার্ড চালু করেছি। বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় এই কার্ড রিচার্জ করে নিয়ে গেলে যেকোনো এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা ও কেনাকাটা করা যাবে। এছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের জন্য ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘ফ্রি মিট অ্যান্ড গ্রীট’ সেবা চালু করা হয়েছে।”

লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট নবাব উদ্দিন বলেন, “এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর পর প্রতারণা রোধে সতর্ক থাকতে হবে।” তিনি বিএ এক্সচেঞ্জের গ্রাহকসেবার প্রশংসা করেন।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র কাস্টমার সার্ভিস অফিসার সৈয়দ ইসলাম, কাস্টমার সার্ভিস অফিসার সুমাইয়া আক্তার ঝুমুর, সিনিয়র সাংবাদিক মো. আব্দুল মুনিম জাহেদি ক্যারল, বাবলুল হক ও মি. মার্টিন।

এই আয়োজনের মাধ্যমে বিএ এক্সচেঞ্জ ইউকে প্রবাসীদের জন্য ব্যাংকিং সেবা আরও সহজ, দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।

শেয়ার করুন: