প্রথমবারের মতো বিদেশি ঋণ পরিশোধে ৪০০ কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সুদ ও আসল মিলিয়ে মোট ৪০৯ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে সরকার, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। আগের অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল ৩৩৭ কোটি ডলার।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, এর মধ্যে ২৫৯ কোটি ডলার ঋণের মূল অর্থ এবং ১৪৯ কোটি ডলার সুদ পরিশোধ করা হয়েছে। গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৩৪ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ শোধ করতে হয়েছে।
অন্যদিকে, ঋণ পরিশোধ বাড়লেও ঋণ ছাড় এবং নতুন প্রতিশ্রুতি কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ঋণ ছাড় হয়েছে ৫৬০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭০২ কোটি ডলার। নতুন ঋণ প্রতিশ্রুতি এসেছে ৫৪৮ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩১ শতাংশ কম।
ঋণদাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সবচেয়ে বেশি অর্থ ছাড় করেছে—২৫২ কোটি ডলার। এরপর রয়েছে বিশ্বব্যাংক ও জাপান। তবে ভারত, চীন ও রাশিয়া এ অর্থবছরে নতুন কোনো ঋণ প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
গত এক যুগে বিদেশি ঋণ পরিশোধ প্রায় চার গুণ বেড়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে যেখানে পরিশোধ হয়েছিল ১১০ কোটি ডলার, সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে ৪০৯ কোটি ডলারে।
ইআরডি কর্মকর্তারা জানান, মেগা প্রকল্পগুলোর গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ায় ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, মেট্রোরেল এবং কর্ণফুলী টানেলের মতো প্রকল্পের কিস্তি পরিশোধ শুরু হওয়ায় ভবিষ্যতে এ চাপ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।