আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বাংলাদেশ বেতার একযোগে সম্প্রচার করে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচন যেন উৎসবমুখর পরিবেশে, শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সেই লক্ষ্যে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।” তিনি আরও জানান, নির্বাচন হবে এমন একটি দিন, যা দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ভাষণে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তুলে ধরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ড. ইউনূস। ৫ আগস্টকে দেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই দিনে দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছিল।”
তিনি জানান, রাষ্ট্র সংস্কার, বিচার এবং অবাধ নির্বাচনের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য রয়েছে। এই সনদের মাধ্যমে জবাবদিহিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্র কাঠামো নিশ্চিত করা হবে।
ভবিষ্যতে যেন আর গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন না হয়, সে জন্যই এখনই রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দেশের ভেতরে ও প্রবাসে বসবাসকারী সকল ভোটারদের জন্য সমান সুযোগ রাখার আশ্বাস দেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, “ভোটের দিন হবে যেন ঈদের মতো আনন্দমুখর। নারী ও তরুণ ভোটারদের অংশগ্রহণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিশ্চিত করা হবে।”
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দলনিরপেক্ষ রাখার উদ্যোগ, জিডি ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, বডি-ক্যামেরা ও জিপিএস ব্যবহারের বাধ্যবাধকতাসহ পুলিশের নানা সংস্কার কার্যক্রমের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন থেকে ৯টি নিবর্তনমূলক ধারা বাদ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। পাশাপাশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় নতুন আইন কার্যকর হবে বলেও জানান।
ভাষণের শেষ অংশে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণ ও নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, “যারা দেশ বদলেছে, তারাই বিশ্ব বদলাতে পারে—তাদের সুযোগ দিন।”
—
প্রয়োজনে এই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে উপসম্পাদকীয়, ব্যানার লিড কিংবা ছোট নিউজ তৈরির সুবিধাও রয়েছে। চাইলে বলে দিন কোনটি লাগবে।
