
ছবি: সংগৃহীত
টাইপ-২ ডায়াবেটিস বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম সাধারণ দীর্ঘস্থায়ী রোগ। লাখো মানুষ এতে ভুগলেও অনেকেই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ সম্পর্কে ধারণাই পান না। কারণ, এটি ধীরে ধীরে শরীরে প্রভাব ফেলে এবং অনেক সময় স্পষ্ট কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না।
ডায়াবেটিসের পরিচিত লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, অতিরিক্ত ক্ষুধা ও তৃষ্ণা, শরীরে দুর্বলতা, ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া কিংবা হাত-পায়ে ঝিনঝিনি ভাব। এসব ঘটে তখনই, যখন শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না অথবা ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করে না। ইনসুলিনই হলো সেই হরমোন, যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
তবে চিকিৎসকদের মতে, এ রোগের আরও কিছু অচেনা বা অস্বাভাবিক লক্ষণ রয়েছে, যেগুলো অনেকেই অবহেলা করেন। অথচ এগুলোও হতে পারে ডায়াবেটিসের সতর্কবার্তা।
হঠাৎ ওজনের পরিবর্তন
ওজন হঠাৎ বেড়ে যাওয়া কিংবা কমে যাওয়া—উভয়ই ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত হতে পারে। ঘন ঘন প্রস্রাবের কারণে শরীরে পানি ও ক্যালরির ঘাটতি হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে রক্তনালির ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শরীরে তরল জমে হাত বা পা ফুলে যায়, এমনকি আংটি বা জুতো হঠাৎ আঁটসাঁট লাগতে পারে।
দাঁতের সমস্যা
মুখ শুকিয়ে যাওয়া, মাড়ি ফোলা বা রক্ত পড়ার মতো সমস্যাও ডায়াবেটিসের কারণে হতে পারে। রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে লালারস কম তৈরি হয়, ফলে মুখে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায় এবং দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির রোগ দেখা দেয়।
পায়ে অস্বাভাবিক জ্বালা
হাত-পায়ে অবশভাব বা ঝিনঝিনি অনুভূত হওয়া ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ। তবে ঠান্ডা মেঝেতে হাঁটার সময় যদি মনে হয় গরম মাটির ওপর হাঁটছেন, তাও হতে পারে ডায়াবেটিসের প্রভাব। দীর্ঘদিন রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এমন সমস্যা দেখা দেয়।
ত্বকে কালচে দাগ
ঘাড়, বগল বা নাভির নিচে ত্বক হঠাৎ কালচে বা গাঢ় হয়ে গেলে সেটি ইনসুলিন প্রতিরোধের লক্ষণ হতে পারে। শরীরে অতিরিক্ত ইনসুলিন জমলে ত্বকে এই পরিবর্তন দেখা যায়।
মাথায় ঝাপসা ভাব
রক্তে শর্করা দীর্ঘদিন বেশি থাকলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাতেও প্রভাব ফেলে। ফলে মাথা ঝাপসা লাগা, মনোযোগ কমে যাওয়া বা অকারণে মন খারাপ হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
করণীয়
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শরীরে এসব অচেনা লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সময়মতো ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে পারলে এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।





