মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দিয়ে চলছে ফেঞ্চুগঞ্জ রেল স্টেশন, স্টেশনের ঘরটিও ভেঙ্গে পড়তে পারে যে কোন সময়!



সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ রেল স্টেশনটির বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। কোন ধরনের সংস্কার কাজ না করায় দিন দিন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে স্টেশনটি।ফেঞ্চুগঞ্জ রেল স্টেশনে আগে স্টেশন মাষ্টার সহ পাঁচজন স্টাফ কাজ করত। বর্তমানে চারজন নেই, আছে শুধু চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী (পিটিআর)। যিনি বর্তমানে দায়িত্বে পালন করছেন। অথচ ফেঞ্চুগঞ্জ রেল স্টেশনটি দেশের অন্যতম প্রাচীন রেল স্টেশন।

জানা যায়, ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার তথা সরকারী মালামাল পরিবহনে রেলস্টেশনের ভূমিকা অপরিসীম। তাছাড়া হযরত শাহ মালুম (র:) দরগা শরিফের কারনে ফেঞ্চুগঞ্জ রেল স্টেশনটি গুরুত্ব বহন করে। কারন যাতায়াত সহজলভ্য ও ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের কাছে হওয়াতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আগমন করেন। মানুষজন স্বল্প খরছে যাতায়াত ও করতে পারেন। এক সময় এ স্টেশনের জৌলুশ ছিল মানুষের পদচারনা। কিন্তু বর্তামানে তা আর দেখা যায়না।

সরেজমিনে ফেঞ্চুগঞ্জ রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, বার্তমান দায়িত্বে থাকা সিরাজ মিয়া ভাঙ্গা স্টেশনটির দিকে অবাক হয়ে কি যেন ভাবছেন। কথা হলে তিনি বলেন, স্টেশনটির জন্য বড় মায়া হয়। সেই যে এসেছিলাম আর কোথাও সুযোগ পেয়ে ও যাইনি। তাই ভাবছি আমি চলে গেলে কি হবে স্টেশনটির।

কি হবে প্রশ্ন করলে ঘুরে ঘুরে দেখালেন স্টেশনটি ঝুরি হয়ে ঝরে পড়ছে চুন চুরকি, ফাটল দেখা দিয়েছে দেয়ালের চতুর্দিকে, উপরের টাই গুলো ভেঙ্গে গেছে। খুঁটি নাই সে কবে থেকে। বাঁশ এনে কয়েকটি খুঁটি লাগিয়েছি।

আরো দেখা গেলো, দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্রামঘারে বসে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই দায়িত্ব পালন সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ কাজ আমার নয়, আমি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (পিটিআর)। এখানকার দায়িত্ব জহর লাল দাসের (বুকিং সহকারী)। বর্তমানে মাইজগাঁও রেল স্টেশনে কাজ করেন। আমি কাজ শিখে গেছি তাই তাঁরা ও সরায় নাই।

তাছড়া এখানে দেখা গেল তাঁর ব্যাবহারিক কাপড়, কম্বল, বালিশসহ ব্যবহারি জিনিসপত্র। এগুলো এখানে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কোয়াটার সেই কবে দখল হয়ে গেছে তাই। এখানেই পিছনে থাকতে হয়। বৃষ্টির সময় ঘুমাতে পারিনা, পানি পড়ে। তাই ঝড় আসলে ভয় লাগে। এমতাবস্থায় এখানে কাজ না করালে যে কোন সময় স্টেশনটি ভেঙ্গে পড়বে বলে মনে করেন তিনি। আমি কাজ করানোর জন্য অনুরোধ করে অনেক কাগজ পাঠিয়েছি। সাংবাদিকরা ও লেখেছেন কিন্তু কোন লাভ হয়নি। অডিট কমিটি আসে দেখেতে এই যা।

এক কথা প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, রেলের যা সম্পদ রয়েছে তা সঠিকভাবে ব্যাবহার করলে রেলের কোন দিন লোকসান হতে পারেনা। তার প্রমাণ হিসেবে তিনি বলেন, এখানে মাত্র চারটি দোকানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে অথচ এখানে দেখেন পুরো জায়গা দখল করে প্রায় বিশটির উপর দোকান হোটেল হয়ে গেছে। কারা দিল এসবের অনুমোদন এবং কারা এ টাকা নেয় প্রতি মাসে এমন প্রশ্ন তার!

এ বিষয়ে কুলাউড়া রেল স্টেশনের প্রকৌশল শাখার সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ার জুয়েলের সাথে যোগাযোগ করে ফেঞ্চুগঞ্জ রেল স্টেশন কাজের কোন অগ্রগতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ করার জন্য জানানো হয়েছে। তবে কবে কাজ হবে এ ব্যপারে কোন কিছু জানানো হয়নি। তিনি আরো বলেন, সব ব্যপারে বলা আমার ঠিক হবে না। এ ব্যপারে আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন বলে তিনি বলেন।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!