ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে দুটি ধারায় ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে ও দণ্ডিত করা হয়েছে।
রায়ে আদালত বলেন, সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে এই টাকা ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের পরিবারকে দিতে হবে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় ওসি মোয়াজ্জেমকে। ২১ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২৮ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
অগ্নিদগ্ধে নিহত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে থানায় যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে গেলে ওসি মোয়াজ্জেম নুসরাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় মোয়াজ্জেম ভিডিও ধারন করেন এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ওসি অত্যন্ত অপমানজনক এবং আপত্তিকর ভাষায় নুসরাতকে একের পর এক প্রশ্ন করেন। একপর্যায়ে তিনি নুসরাতেকে বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করেছে কি না, সে কথা জিজ্ঞেস করেন, যা অত্যন্ত মানহানিকর। তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে অনুমতি ছাড়াই নুসরাত জাহান রাফির ভিডিও ধারণ করেন। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে ৬ এপ্রিল মুখোশ পরা চার-পাঁচজন নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার পাঁচ দিন পর মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যায় নুসরাত। পরে হত্যা মামলায় আদালত গত ২৪ অক্টোবর ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন।