বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

কমলগঞ্জে ধলাই সেতুর দুই পাশ সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে



মৌলভীবাজরের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ও মাধবপুর ইউনিয়নের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে ঘোড়ামাড়া-শুকুর উল্লাহগাঁও সড়ক। প্রতিদিনে এই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এই সড়কে ধলাই নদীর উপর বিদ্যমান সেতুটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার ৪ বছর অতিবাহিত হলেও শুধুমাত্র ব্রীজের দুই পাশের এপ্রোচ রোডের পাকা করণ কাজ অসমাপ্ত থাকায় এলাকাবাসী যাতায়াতে পোহাচ্ছেন চরম দুর্ভোগ। তাছাড়া সেতুর দুই পাশের সংযোগ স্থলের মাটি ভেঙ্গে পড়ে কাঁচা রাস্তাটি অতিরিক্ত সংকীর্ণ হয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে একাধিক দুর্ঘটনা।

উল্লেখ্য, আজ হতে চার বছর আগে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৯৬ মিঃ আরসিসি পিএসসি গার্ডার এই সেতুটি। নির্মাণকাজ সমাপ্ত হওয়ার পর বিগত ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ সেতুটি উদ্বোধন করেন এ অঞ্চলের সাংসদ সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আলহাজ্ব মো.আব্দুস শহীদ এমপি।

আলাপ কালে স্থানীয় বাসিন্দারা এ প্রতিবেদক কে জানান, সেতুটি উদ্বোধনের সময় দুই পাশের এপ্রোচ রোডও খুব দ্রুতই পাকা করণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন সাংসদ । দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর অতিক্রান্ত হতে চললো কিন্তু অদ্যাবধি সেই প্রতিশ্রুতির বিষয়টি আলোর মুখ দেখেনি। ফলে গ্রামীণ এই কাঁচা সড়কটিতে কোন ধরনের উন্নয়ন মূলক কাজ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই সড়কে যাতায়াতকারী দুই ইউনিয়নে বসবাসকারী লোকজনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন। এবং প্রতিনিয়িত তারা শিকার হচ্ছেন ছোট খাটো নানা দুর্ঘটনার।

বিশেষ করে গার্ডার সেতুটির দুই মাথা থেকে মাটি নিচে নেমে যাওয়ায় মোটরসাইকেল বাইসাইকেল ব্যতীত অন্যান্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। যার ফলে এ অঞ্চলে ঘুরতে আসা পর্যটকদের পর্যটন কেন্দ্র মাধবপুর লেইক ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি স্মরণীসহ বিভিন্ন দশর্নীয় স্পট প্রায় ৯ কিঃমিঃ ঘুরে আসতে হচ্ছে । এতে তাদের এক দিকে যেমন অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে তেমনি ভাড়ার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে এবং নষ্ট হচ্ছে প্রয়োজনীয় কর্মঘন্টা।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, শুধু মাত্র রাজনৈতিক রেষারেষির কারণে এই রাস্তাটিতে মাটি ভরাট এবং ইট সলিং এর কাজ হচ্ছে না। এদিকে অতিসম্প্রতি সড়কটির মাধবপুর অংশে একটি কালভার্ট ভেঙ্গে পড়ার বিষয়টি যেন গ্রামবাসীর উপর মড়ার উপর খাড়ার ঘাঁ এর মতো । ভেঙ্গে পড়া এই কালভার্টটির উপর ফিসপ্লেট ফেলে যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এলাকার কৃষক ও শিক্ষার্থীরা। শুকুরউল্লা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে এলাকার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু ভেঙ্গেপড়া কালভার্টটির সংস্কার ও সড়কটি পাকা করন না হওয়াতে আমাদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। তিনি প্রশানের নিকট অবিলম্বে রাস্তা ও কালভার্ট টি সংস্কারের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থী রিপা বেগম বলেন, আমার মত শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। কিন্তু রাস্তার মাঝখানে এসে ভয় লাগে। সেতু ভাল থাকলেও রাস্তা কাঁচা থাকায় এবং সেতু এর দুই মাথা হতে মাটি অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় আমাদের কষ্ট করে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করতে হয়। আমাদের দাবি আমরা যাতে সুন্দর ভাবে পড়াশোনার জন্য বিদ্যালয়ে যেতে পারি সেজন্য যাতে রাস্তাটি পাকাকরণ করা হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল কুমার সিংহ মুঠোফোনে আলাপকালে জানান, তিনি গত দুইবার সেঁতুটির একপাশে ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে প্রায় ছয় হাজার টাকা খরচ করে মাটি ভরাট করেছেন। কিন্তু বিগত দিনের অতিবৃষ্টির কারণে মাটিগুলো সরে গিয়ে সেতুর দুই মাথার এই অবস্থা হয়েছে। তিনি আরো জানান মৌলভীবাজার এলজিইডি কে বিষয়টি জানালে এলজিইডি অফিসের লোকজন এসে রাস্তাটি মেপে নিয়ে যায় কিন্তু আজ অব্দি কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে না বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

স্থানীয় চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু বলেন, সড়ক ও সেতুটির এই বেহাল অবস্থা থাকায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। তিনি আরো বলেন রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে দুই ইউনিয়নবাসীসহ পর্যটকদের যোগাযোগ ব্যবস্থায আরো একধাপ এগিয়ে যেত।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!