প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের নববর্ষের অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে করা এক বিশেষ বৈঠকে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাছাড়া দেশ ‘মারাত্মক পরিস্থিতি’র মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলে সিনিয়র কর্মকর্তাদের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
উহান শহরে প্রথম লক্ষ্মণ দেখা যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৫৬ জন মারা গেছে এবং প্রায় ২০০০ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের পক্ষে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। বিজ্ঞানীদের অনুমান, একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি গড়ে আড়াইজন মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে। তাই ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ছড়িয়ে পড়ার হার ৬০% কমাতে হবে। বিজ্ঞানীদের মতে এই পদক্ষেপ নিশ্চিত করা সহজ নয়। তাই স্বাভাবিকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ চীনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা কঠিন হবে!
ল্যাংকাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল ভাইরাস আক্রান্তদের সংখ্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের ধারণা অনুযায়ী এবছরে ১১ হাজার মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের অনুমান সত্যি হলে এই সংখ্যা সার্স’এ আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে বেশি।
এদিকে ইতোমধ্যে চীনের একাধিক শহরে ঢোকা এবং শহর থেকে বের হওয়ার ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। রবিবার থেকে উহানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় পত্রিকা পিপল’স ডেইলি জানিয়েছে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জরুরি সেবাদানের লক্ষ্যে ১৩০০ শয্যাবিশিষ্ট দ্বিতীয় একটি হাসপাতাল নির্মাণকাজ শুরু করা হবে এ সপ্তাহের মধ্যেই। এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতাল নির্মাণকাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। উহান শহর যে প্রদেশে অবস্থিত, সেই হুবেই প্রদেশে বিশেষজ্ঞ সেনা চিকিৎসা দল পাঠানো হয়েছে।
জেনে রাখা ভালো, করোনাভাইরাস সংক্রমনের লক্ষ্মণ সাধারণ সর্দিজ্বরের মতোই। তবে এই ভাইরাস এর আগে কখনো দেখা যায়নি, তাই এটিকে বলা হচ্ছে ২০১৯-এনকভ, অথবা ‘নভেল করোনাভাইরাস।’ পশু থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার পর নতুন ভাইরাস মানুষের মধ্যে সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
২০০৩ সালে সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম) শুরুতে ছড়িয়ে পড়েছিল বাদুরের মাধ্যমে এবং পড়ে তা বিড়াল জাতীয় প্রাণীর মধ্যে সংক্রমিত হয়, যা সবশেষে মানুষের মধ্যে আসে। নতুন এই করোনাভাইরাসও শ্বাস-প্রশ্বাসকে সংক্রমিত করে।
