বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সভাপতি – বদরুল, সাধারণ সম্পাদক – নাজমুল, কোষাধ্যক্ষ – আনছার

প্রবাসী বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্টের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন



বেশ উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে ভোট প্রদানের মধ্য দিয়ে গত রোববার (১২ জুন) সম্পন্ন হয়েছে প্রবাসী বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্টের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। ২১টি পদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দুইটি প্যানেল বদরুল-মীরু-আনছার পরিষদ (ঘর প্রতীক) এবং সাদ-নাজমুল-মুজিব পরিষদ (সানফ্লাওয়ার প্রতীক) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তবে প্রচার-প্রকাশনা পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সেই পদটিতে আর ভোটগ্রহণ হয়নি। সেই পদে জামান আহমেদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বাকি ২০টি পদে বদরুল-মীরু-আনছার পরিষদ (ঘর প্রতিক) ৫টি ও সাদ-নাজমুল-মুজিব পরিষদ (সানফ্লাওয়ার প্রতীক) ১৫টি পদে জয়লাভ করে।

বদরুল-মীরু-আনছার পরিষদ (ঘর প্রতিক)-এর বিজয়ীরা হচ্ছেন: সভাপতি পদে – বদরুল ইসলাম, সহসাধারণ সম্পাদক পদে – মো. রুহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ পদে – মো. আনছার মিয়া, নির্বাহি সদস্য পদে – মো. আব্দুর রহিম ও মৌলানা মো. গোলাম কিবরিয়া।

সাদ-নাজমুল-মুজিব পরিষদ (সানফ্লাওয়ার প্রতীক)-এর বিজয়ীরা হচ্ছেন: সিনিয়র সহসভাপতি পদে – বদরুজ্জামান চৌধুরী, সহসভাপতি পদে – আব্দুল কাদির (রুনু) ও হাজী মাহমুদ আলী, সাধারণ সম্পাদক পদে – নাজমুল ইসলাম, সহসাধারণ সম্পাদক পদে – কবির আহমেদ (রাসেল), সহকোষাধ্যক্ষ পদে – দবির আহমেদ, সদস্যবিষয়ক সম্পাদক পদে – আতিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে – মফিজুর রহমান খান, দফতর সম্পাদক পদে – মো. ওয়াহিদ আহমেদ, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে – রুশনারা বেগম, নির্বাহি সদস্য পদে – পিয়ার আলী, মোশাহিদ মিয়া, মো. সানুর মিয়া, নুরুল হাসান (ইকবাল) ও মো. আওলাদ আলী।

উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে ভোট প্রদানের জন্য বৃটেনের বিভিন্ন শহর থেকে সপরিবারে ট্রাস্টিরা লণ্ডনে আসেন। সকাল ১০:০০ ঘটিকা হতে বিকাল ৬:০০ ঘটিকা পর্যন্ত পূর্ব লন্ডনের ওয়েলক্লোজ স্ট্রিটের এনজাইন ইয়ুথ ক্লাবে ট্রাস্টিরা নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন। নির্বাচনে কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন – ব্যারিস্টার মো. আবুল কালাম, ব্যারিস্টার মো. লুৎফুর রহমান ও অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহজাহান। পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়।

এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেলই বেশ জনগুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গীকার নিয়ে ভোটারদের ভোট প্রার্থনা করেন। বদরুল-মীরু-আনছার পরিষদ (ঘর প্রতীক) এর নির্বাচনী অঙ্গীকারনামায় ছিল – (১) জরুরী ভিত্তিতে ট্রাস্টকে বাংলাদেশে নিবন্ধনের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা , (২) বিভিন্ন ইউনিয়নের স্কুল ও কলেজের মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি প্রদানের প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করা, (৩) মহিলাদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্যোগ গ্রহণ করা ও (৪) বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী চালু করা ।

সাদ-নাজমুল-মুজিব পরিষদ (সানফ্লাওয়ার প্রতীক) এর অঙ্গীকারনামায় ছিল — (১) সংবিধান সমুন্নত রেখে আন্তর্জাতিক চ্যারিটি রেজিস্ট্রশনের প্রক্রিয়া দ্রুত করা। (২) বাংলাদেশে ভূমি ক্রয় করে স্থায়ী ভবন ও অফিস নির্মাণ করা। (৩) বৃত্তি প্রদানপদ্ধতি সময়োপযুগী করার লক্ষ্যে পুনঃমূল্যায়ন করা। (৪) ট্রাস্টিদের সুবিধার্থে পোস্টাল বা প্রক্সি ভোট চালু করা।

উল্লেখ্য, সিলেটের বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এলাকার শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে এলাকার যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা মিলে ১৯৯১ সালে এইসংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এখন এই সংগঠনের ট্রাষ্টি সংখ্যা ৩৮১০ জন। এই সংগঠনের নামে বাংলাদেশের তিনটি ব্যাংকে প্রায় ১২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মুলধন হিসেবে জমা আছে । এই সঞ্চয় থেকে বছরে মুনাফা আসে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা। এই টাকা থেকেই প্রতি বছর এলাকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান করা হয়। দুই উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে এই বৃত্তি প্রদান করা হয়। ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে একাদ্বশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রতি শিক্ষার্থীকে ৪ হাজার টাকা করে এবং ডিগ্রী পর্যায়ের শিক্ষার্থীকে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৩০ বছরে কমপক্ষে ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করেছে এই এডুকেশন ট্রাস্ট। দেশের বাইরে প্রবাসে এই সংগঠন কমিউনিটি সংগঠনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং এর তহবিলে সঞ্চয়ের পরিমানও সবার চেয়ে বেশি। এলাকায় শিক্ষার প্রসারে এই সংগঠন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!