শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমলগঞ্জে পল্লী চিকিৎসার নামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতারণা 



মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন গাছের লতা পাতা দিয়ে হাতের তৈরি ঔষধ বানিয়ে সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। ভুক্তভোগীরা জানান রান্না করার হাড়ির উপরের ডাকনা নিঃসন্তানি পুরুষ এবং মহিলার শরীরের নাবির উপরে রেখে কিছু সময় পরে মাটি দিয়ে ঝার ফুক দিয়ে সমস্যা নির্ণয় করে বলে দেন আপনাদের শরীরে সমস্যা রয়েছে ফলে সন্তান হচ্ছে না। আমার কোম্পানির ঔষধ সেবনে কিছু দিনের ভিতরে আপনি একজন ফুটফুটে নবজাতক সন্তান জন্ম দেবেন। আমাকে কোন টাকা দিতে হবে না শুধু আমাদের কোম্পানির প্রচারের জন্য কিচু ঔষধ দিচ্ছি। তবে আপনারা আপনাদের এলাকার ফার্মেসী থেকে কিচু ঔষধ কিনে আনতে হবে আমি লিখে দিচ্ছি। এনে আমার দেয়া কোম্পানির ঔষধের সাথে মিশিয়ে খাবেন। আর আমি প্রতি শনিবার এসে দেখে যাবো। তবে আপনারা যে ঔষধ গুলো কিনে আনবেন সেই গুলো মৌলভীবাজার ছাড়া আর কোথাও পাবেন না। এবং ঔষধ গুলো আমার কাছেও আছে দিতে পারি এই মুহূর্তে আমাকে নগদ টাকা দিতে হবে। ঔষধের মুল্য কত জানতে চাইলে বলেন, আপনাদের এলাকার ফার্মেসী থেকে আনলে সব মিলিয়ে চার হাজার টাকা লাগবে।

সন্তান লাভের আশায় তার কথা বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছেন অনেকেই। এখন ঔযধ ব্যবহার করে এক টাকারও ফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ঔষধ ব্যবহারের ফলে আপনি সহবাস করতে পারবেন ২০ থেকে ২৫ মিনিট এবং সন্তান লাভ করবেন। এভাবে মিথ্যা কথা বলে গ্রামের সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারণা করছেন মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার মৌছামান্দ্রা গ্রামের মো.তৌহিদুল ইসলাম নামের গ্রামে গ্রামে ফেরিওয়ালা পল্লী চিকিৎসক নামের প্রতারক এবং তার চক্রটি।

জানা গেছে, সাত থেকে আটজন লোক রয়েছে তার চক্রে। বিশেষ করে নিঃসন্তানি পুরুষ মহিলা টার্গেট তাদের। আর তাদের টার্গেট প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা। এটাকে পুজিকরে তারা গ্রাম এলাকার সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিন্দুমাত্র উপকার না পাওয়ার ফলে রুগীরা তার দেয়া ভিজিটিং কার্ডে থাকা মোবাইলে যোগাযোগ করেও কোন সঠিক উত্তর পাচ্ছেন না। আজকে আসতেছি, কাল আসবো, এসে গেছি, এখন আপনার বাড়ির কাছেই আছি, ঘন্টার পর ঘন্টা এভাবে মিথ্যা কথা রুগীকে শুনতে হয় মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে। ফলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের শেষ নেই। এ উপজেলার প্রায় দুই শতাধিকেরও বেশি পুরুষ মহিলা প্রতারনার শিকার হয়েছেন।

তারা জানান বিয়ের দীর্ঘদিন পরও সন্তান না হওয়ায় হতাশায় ভুগছিলেন। তৌহিদুর ইসলাম নামে পরিচয় দানকারী চিকিৎসক তাদের সবাইকে পাউডার জাতীয় ওষুধ পানিতে মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেয়। বিশ্বাস করে চিকিৎসা ফি ও ঔষধ মুল্য ভাবত ২ হাজার, কারো কাছ থেকে ২৫ শ টাকা, কারো কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়েছে তৌহিদুল। ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মোবাইলে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিক বার ফোনে কল দিলেও ফোন রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!