
ইসরায়েলি হামলায় এক রাতেই গাজায় তিন শতাশিক মানুষ নিহত হয়েছে। ছবি: গেটি ইমেজেস
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের জোরালো বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা চারশো ছাড়িয়েছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ এই তথ্য পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা হামাস নিয়ন্ত্রিত ‘সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলা চালাচ্ছে। গাজার উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হামাসের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদ আবু ওয়াফাহ একটি হামলায় নিহত হয়েছেন বলে ও জানা গেছে। খবর বিবিসি বাংলার
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ মঙ্গলবার সকালে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজায় এটিই সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আলোচনা সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, পবিত্র রমজান মাস হওয়ায় অনেক লোক সেহরি খাচ্ছিলেন, তখনই গাজায় বিস্ফোরণ শুরু হয়। ২০টিরও বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজা সিটি, রাফাহ ও খান ইউনিসের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে শুরু করে বলে তারা জানিয়েছেন।
সোমবার রাতের হামলা সম্পর্কে ৩৬ বছর বয়সী মোহাম্মদ জারঘউন বলছিলেন, খান ইউনিসে তার ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির কাছে একটি তাঁবুতে ঘুমাচ্ছিলেন তারা, এসময় প্রচণ্ড বিস্ফোরণে জেগে ওঠেন।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম এটা দুঃস্বপ্ন! কিন্তু আমি আমার আত্মীয়দের বাড়িতে আগুন দেখেছি। ২০ জনের বেশি শহীদ ও আহত হয়েছে যাদের অধিকাংশই শিশু ও নারী।”
২৫ বছর বয়সী রমেজ আলামমারিন গাজা শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে শিশুদের নিয়ে যাওয়ার বর্ণনা দিয়েছেন। “তারা গাজায় আবার জাহান্নামের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে,” তিনি ইসরায়েল সম্পর্কে বলেন, “মৃতদেহ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মাটিতে পড়ে আছে এবং আহতরা তাদের চিকিৎসার জন্য কোনো ডাক্তার খুঁজে পাচ্ছে না।”
তিনি এএফপিকে বলেন, “তারা ওই এলাকার একটি ভবনে বোমা হামলা চালিয়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও হতাহতরা রয়েছে, চারদিকে ভয় ও আতঙ্ক। জীবনের চেয়ে মৃত্যু ভালো।”
গাজার ২১ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আনুমানিক ৭০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের অভাব রয়েছে।