
ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দর হিথ্রো শুক্রবার (২১ মার্চ) সারা দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যাত্রীদের সেখানে না আসার অনুরোধ করা হয়েছে।
পশ্চিম লন্ডনের হেইস এলাকায় অবস্থিত একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বিমানবন্দরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ২১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে।”
তিনি আরও জানান, দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন, তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ কখন স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন প্রায় ১,৩০০টি ফ্লাইট ওঠা-নামা করে। শুক্রবারের এই অচলাবস্থার কারণে অন্তত ১,৩৫১টি ফ্লাইট বাতিল বা ব্যাহত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার জানিয়েছে, যখন হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়, তখন প্রায় ১২০টি ফ্লাইট আকাশে ছিল। এতে অনেক যাত্রী ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন এয়ারলাইনস তাদের ফ্লাইটের গতিপথ পরিবর্তন করেছে—
ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স: হিথ্রোর উদ্দেশ্যে যাওয়া সাতটি ফ্লাইট মাঝপথ থেকে ফিরে গেছে বা অন্য বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। কোয়ান্টাস এয়ারলাইনস: তাদের দুটি ফ্লাইট লন্ডনের বদলে প্যারিসে অবতরণ করেছে।
অনেক যাত্রী এডিনবার্গ, গ্লাসগো বা অ্যাবারডিনের বিকল্প ফ্লাইট খুঁজতে চেষ্টা করেছেন, তবে শেষ মুহূর্তে অতিরিক্ত খরচের বিষয়েও তাদের ভাবতে হচ্ছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২৩ মিনিটে পশ্চিম লন্ডনের হেইস সাবস্টেশনে আগুন লাগে। এতে হাজার হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে এবং প্রায় ১৫০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। ১০টি ফায়ার ইঞ্জিন এবং ৭০ জন দমকল কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সাবস্টেশনের চারপাশে ২০০ মিটার নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে দরজা-জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আগুনের কারণে প্রথমে ১৬,৩০০ বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে—৬২,০০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ ফের চালু হয়েছে। শুক্রবার সকালেও ৪,৯০০ বাড়ি বিদ্যুৎহীন ছিল। লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, এই ঘটনায় ২০০টির বেশি ফোনকল এসেছে। শুধু বিমানবন্দরই নয়, হিথ্রোর আশপাশের রেল যোগাযোগও বিঘ্নিত হয়েছে। ফলে যাত্রীরা বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজ করছেন। হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং যাত্রীদের তাদের এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে।



