রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

কবর জিয়ারতের নিয়ম



কবর জিয়ারত করা ইসলামে একটি সুন্নত ও বরকতময় ইবাদত। এ আমলের মাধ্যমে মানুষের অন্তর নরম হয়, চোখে অশ্রু আসে এবং মৃত্যুর বাস্তবতা ও আখেরাতের কথা স্মরণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং সাহাবায়ে কেরাম নিয়মিত কবর জিয়ারত করতেন।

নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন:
‘তোমরা কবর জিয়ারত করো, কেননা তা দুনিয়াবিমুখতা সৃষ্টি করে এবং আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’
— (ইবনে মাজাহ: ১৫৭১)

কবর জিয়ারতের আদব ও নিয়ম:

কবরস্থানে গেলে সর্বপ্রথম কবর জিয়ারতের বিশেষ দোয়া পাঠ করা সুন্নত। এরপর মৃতের ইসালে সওয়াব এর নিয়তে কিছু দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস এবং যেসব সুরা সহজ মনে হয়, সেগুলো পাঠ করা উত্তম। এরপর মাইয়েতের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা যায়।

হাদিস শরিফে কিছু সুরা ও দরুদের বিশেষ ফজিলতের কথা উল্লেখ আছে যা কবর জিয়ারতের সময় পাঠ করা সুন্নত হিসেবে বিবেচিত হয়। দরুদ শরিফ পাঠ করাও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।

দুয়ার সঠিক পদ্ধতি:

বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়, অনেকে কবরের দিকে মুখ করে হাত তুলে দোয়া করেন। এটি সঠিক পদ্ধতি নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পদ্ধতি হলো: সালাম ও দরুদ পেশ করার পর কবর থেকে কিছুটা সরে এসে কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা। এটাই উত্তম ও সুন্নত অনুসারে পদ্ধতি।

সাহাবায়ে কেরামের আমল:

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, আবদুল্লাহ যুলবিজাদাইন (রা.)-এর দাফনের সময় তিনি রাসুল (সা.)-কে তার কবরের পাশে দোয়া করতে দেখেছেন। দাফন শেষে নবী করিম (সা.) দুই হাত তুলে কেবলামুখী হয়ে দোয়া করেছিলেন:
‘হে আল্লাহ! আমি তার ওপর সন্তুষ্ট, আপনিও তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যান।’
— (মুসনাদে বাজ্জার: হাদিস ১৭০৬; ফাতহুল বারি: ১১/১৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ৫/৩৫০)

সারসংক্ষেপ:
কবর জিয়ারত একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল, যা মানুষকে দুনিয়াবিমুখতা ও আখেরাতের স্মরণে উদ্বুদ্ধ করে। জিয়ারতের সময় দোয়া, দরুদ ও কুরআনের আয়াত পাঠ এবং সঠিকভাবে কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা সুন্নতের আলোকে পালনযোগ্য বিষয়।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!