রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আজ (৫ আগস্ট) বিকেলে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় প্রণীত এ ঘোষণাপত্রে একটি গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিমুক্ত ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের অঙ্গীকার প্রকাশ করা হয়।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতার চেতনাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে এসেছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান একটি যুগান্তকারী মোড় সৃষ্টি করে। এতে বলা হয়, একদলীয় শাসন, ফ্যাসিবাদ, রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ চূড়ান্ত রূপ নেয়।
ঘোষণাপত্রে অতীতের রাজনৈতিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের রায় ও পরবর্তী করণীয় তুলে ধরা হয়। এতে শেখ হাসিনার সরকারের দমনমূলক শাসনের সমালোচনা করে বলা হয়, ভোটাধিকার হরণ, গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, অর্থনৈতিক দুর্নীতি এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মাধ্যমে দেশকে সংকটে ফেলে দেওয়া হয়।
প্রতিবাদী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট ২০২৪-এ ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটে এবং জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর ভেঙে দেওয়া হয় দ্বাদশ সংসদ এবং সুশাসনের ভিত্তিতে একটি নতুন নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয়।
ঘোষণাপত্রে ২০২৪ সালের আন্দোলনে শহীদদের জাতীয় বীর হিসেবে স্বীকৃতি, তাদের পরিবার ও আহতদের আইনি সুরক্ষা এবং সকল দোষীদের বিচারের দাবিও তুলে ধরা হয়েছে। একইসঙ্গে ঘোষণা করা হয়, একটি পরিবেশবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার সাধিত হবে।
এই ঘোষণাপত্রে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক ও টেকসই রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।