
বৃহত্তর সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতি ও শিক্ষা আন্দোলনের ইতিহাসে মহিউদ্দিন শীরু এক অনন্য নাম। ১৯৫৫ সালের ২৫জুলাই তিনি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।
সাংবাদিকতা, সাহিত্য, গবেষণা ও শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদান আজও সমানভাবে স্মরণীয়। শুধু লেখনী নয়, কর্ম দিয়েও তিনি প্রমাণ করেছিলেন—একজন মানুষ চাইলে সমাজকে বদলে দিতে পারেন।
মহিউদ্দিন শীরু ছিলেন কবি, গীতিকার ও গবেষক। তাঁর সাহিত্যচর্চা সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছিল। দীর্ঘদিন তিনি সিলেট বেতারের নিয়মিত সাহিত্য আসরের প্রযোজক ছিলেন। তাঁর লেখায় ফুটে উঠত মানুষের কথা, সমাজের কথা এবং মানবতার জয়গান।
সাংবাদিকতায়ও তাঁর অবদান অনন্য। দৈনিক গ্রাম সুরমা ও দৈনিক সুদিন পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন, বস্তুনিষ্ঠ লেখা এবং সমাজ পরিবর্তনের আহ্বান ছিল তাঁর সাংবাদিকতার বৈশিষ্ট্য। সিলেট প্রেসক্লাবের একাধিকবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি সাংবাদিক সমাজকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
কেবল কলমের মানুষ নন, মহিউদ্দিন শীরু ছিলেন শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত। গোয়ালাবাজার মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অবৈতনিক অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নারীর শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন বালাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের আমৃত্যু অধ্যক্ষ। শিক্ষা প্রসারে তাঁর উদ্যোগ ও আত্মত্যাগ আজও এলাকাবাসীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণীয়।
কবিতা, গবেষণা, শিক্ষা ও সাংবাদিকতা—সবক্ষেত্রেই মহিউদ্দিন শীরু ছিলেন এক আলোকিত পথপ্রদর্শক। তাঁর জীবনযাত্রা, মূল্যবোধ ও সংগ্রামী মানসিকতা আগামী প্রজন্মের কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ২০২৫, তাঁর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।
এই দিনটিকে স্মরণীয় রাখতে মহিউদ্দিন শীরু স্মৃতি পরিষদ ও পরিবার প্রতিবছরের মতো এবারও আয়োজন করেছে খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল, এতিমদের খাবার বিতরণ ও বিশেষ দোয়া মাহফিলের। সহকর্মী, শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীরা আজও তাঁর স্মৃতিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছেন।
আল্লাহপাক তাঁর আত্মাকে শান্তি দান করুন এবং জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকামে আসীন করুন, আ-মিন।





