যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। জুন মাসের শুরুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
২৮০ কোটি ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যে আমদানি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি শুক্রবার (২২ জুন) থেকে কার্যকর করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।
গত মার্চে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনথেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর যথাক্রমে ২৫ শতাংশ ও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সে সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ তিনি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয় ১ জুন। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ঘনিষ্ঠ মিত্রদের বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ হিসেবে পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৌরবন হুইস্কি, মোটরসাইকেল ও অরেঞ্জ জুসের মতো পণ্যগুলোর ওপর শুল্ক আরোপ হবে। বৃহস্পতিবার (২১ জুন) ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জ্যাঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি ‘সব যুক্তি ও ঐতিহাসিক পরম্পরাকে ছাড়িয়ে গেছে। ডাবলিনে আইরিশ পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভারসাম্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের যা করার তা করব।’
উল্লেখ্য, দুনিয়ার বৃহত্তম স্টিল বা ইস্পাত আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৭ সালে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন ইস্পাত আমদনি করে দেশটি। তবে এ বছরের গোড়ার দিকে টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপের পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প। তখনই এর কঠোর সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো। কথিত এই বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পকে মাথা ঠাণ্ডা রাখার আহ্বান জানায় জাপান। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী হিরোশিগে সেকো বলেন,মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আমরা ‘ঠাণ্ডা মাথার আচরণ’ করার আহ্বান জানাই।
সে সময় ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যাঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, ‘কোনও অন্যায্য ব্যবস্থার কারণে আমাদের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরাও চুপ করে বসে থাকবো না।
এমন হলে হাজার হাজার ইউরোপিয়ানের চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। আমরা হার্লি-ডেভিসন,লেভিস-এর বৌরবন ও নীল জিনসের ওপর শুল্ক আরোপ করবো।’