বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেই ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে জ্যামাইকা টেস্টেও তিন দিনে হার



জ্যামাইকা টেস্টে বাংলাদেশকে ১৬৬ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ম্যাচের সিরিজ জিতে নিয়েছে ২-০তে। অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল দুই দিন ও এক সেশনে।

বাংলাদেশের হয়ে এদিন লড়লেন কেবল সাকিব আল হাসান। বল হাতে রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্সের পর ব্যাটিংয়েও লড়িয়ে ফিফটি। কিন্তু বিবর্ণ দলের বাকিরা।

মিরাজ-মুশফিকদের বিষাদগ্রস্ত মুখ। বোলিং কোচ ওয়ালশের মাথা হেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশ দলের প্রতীকী ছবি। ছবি: এএফপি

অথচ এই টেস্ট জয়ের জন্য হাতে দুই দিনের বেশি সময় ছিল, লক্ষ্য ৩৩৫ রান। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের হাতে মনে হয় সময়ই ছিল না! কিসের যেন তাড়া, কিসের যেন ব্যস্ততা…। প্রথম ইনিংসে দেড় শ করতে পারেনি। ১৪৯ রানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসেও হতাশাজনক ব্যাটিং। দেড় শ পার হয়েছে ঠিকই। কিন্তু থেমে যায় ১৬৮-তে এসে। দ্বিতীয় টেস্টে ১৬৬ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২৯ রানে আটকে দিয়ে ভালো কিছুর বার্তা দিচ্ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ১৭ ওভার বল করে ৩৩ রান দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬ উইকেট শিকার করে সাকিব একাই উইন্ডিজদের ব্যাটিং ছিন্নভিন্ন করে দেন। ঘরের বাইরে প্রতিপক্ষকে কিংবা প্রতিপক্ষের মাঠে এটাই সবচেয়ে কম রানে অলআউট করার রেকর্ড বাংলাদেশের। আগেরটা ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০৩ সালে মুলতানে, ১৭৫ রান।

প্রতিপক্ষের ৩৩৫ রান তাড়া করতে নেমে দিনটা সাকিব নিজের করে নিতে চাইলেন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানটাও (৫৪) যে তিনিই করেছেন। পুরো ম্যাচে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিবই অর্ধশতক করেছেন।

বোলিংয়ে ৬ উইকেটের পর বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিংয়েও সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন সাকিব। ছবি: এএফপি

প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ করা তামিম আজকে কোনো রান না করেই ফিরে যান। দলের ২ রানের মাথায় ওপেনার তামিম ইকবাল আউট হয়ে ফেরেন। আরেক ওপেনার লিটন দাশ দৃঢ়তার সঙ্গেই ব্যাট চালাচ্ছিলেন। তবে ব্যক্তিগত ৩৩ এবং দলীয় ৪০ রানের মাথায় তিনিও সাজঘরে ফিরে যান। প্রথম ইনিংসে কোনো রান না করা মুমিনুল এই ইনিংসে করেন ১৫ রান। এরপর মাহমুদউল্লাহও ব্যর্থ। মুশফিক এসে সাকিবকে বেশ কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন। ৩৬ বলে ৩১ রান করে হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মুশফিক। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ৫ উইকেটে ১২১ রান। ১২১ রানেই নুরুল হাসানকে হারিয়ে ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে যায় বাংলাদেশের।
অন্য প্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন সাকিব। এরপর দলীয় ১৬২ রানের মাথায় তিনিও হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। বাংলাদেশের ইনিংস আক্ষরিক অর্থেই তখন শেষ হয়ে যায়।

সাকিবকে আউট করে উল্লসিত হোল্ডার। বাংলাদেশের দুই ইনিংসেই তাণ্ডব চালিয়েছেন এই পেসার। পেয়েছেন ম্যাচ সেরা ও সিরিজ সেরা পুরুস্কার। ছবি: এএফপি

প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া হোল্ডার দ্বিতীয় ইনিংসেও ৬ উইকেট শিকার করেন। ম্যাচসেরার পুরস্কারও হোল্ডারের পকেটে যায়।

এদিকে, বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করে ক্যারিবিয়ানরা নিশ্চিত করেছে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের আটে ওঠা। বাংলাদেশ নেমে যাচ্ছে নয়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩৫৪

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৪৯

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১২৯

বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ৩৩৫) ৪২ ওভারে ১৬৮ (তামিম ০, লিটন ৩৩, মুমিনুল ১৫, সাকিব ৫৪, মাহমুদউল্লাহ ৪, মুশফিক ৩১, সোহান ০, মিরাজ ১০, তাইজুল ১৩*, কামরুল ০, আবু জায়েদ ০; হোল্ডার ৬/৫৯, গ্যাব্রিয়েল ১/২৯, পল ১/৩৪, কামিন্স ০/২০, চেইস ২/১৪)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৬ রানে জয়ী

সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০তে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জেসন হোল্ডার

ম্যান অব দা সিরিজ: জেসন হোল্ডার

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!