গায়ানায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৩ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩ ম্যাচের সিরিজে ফিরিয়েছে সমতা। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বুধবার (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার) শিমরন হেটমায়ারের অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলেছিল ২৭১ রান। জয় নাগালে পেয়েও বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত থমকে গেছে ২৬৮ রানে।
অথচ এই ম্যাচে এক পর্যায়ে ৫ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪০। হাতে ৭ উইকেট। ২ ওভারে চাই ১৪, উইকেট ৬টি। এই সময়ের বাস্তবতায় চাইলেও যেন হারা কঠিন। কিন্তু সেই অসাধ্য সাধন করেই ছাড়ল বাংলাদেশ! সহজ ম্যাচ কঠিন করে আরও একবার ভজকট পাকাল শেষে; হার মানল স্নায়ুর লড়াইয়ে। হাতের মুঠোয় থাকা জয় উপহার দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় হতাশা সঙ্গী করেই মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে।
তবে ম্যাচ শেষে কাঠগড়ায় বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিং আর শেষদিকের এই ব্যাটিং ব্যর্থতা ছাড়াও সেই সাথে আসামীর আসনে আছে আরও একটি বিষয়। সেটি ডিআরএস নিয়ে আইসিসির একটি নিয়ম।
আইসিসির আইনের ২৩ নং ধারার ১-এর তৃতীয় উপধারায় আছে, আম্পায়ার আউট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বলটি ‘ডেড’ হয়ে যাবে। অর্থাৎ তখন ওই ডেলিভারি থেকে ব্যাটসম্যান কোনো রান পাবেন না। মুশফিকের ক্ষেত্রেও ঠিক তা–ই ঘটেছে। প্রথম সিদ্ধান্তটি ‘আউট’ থাকায় ওই বলে কোন রান যোগ হয়নি। যদি রিভিউয়ের মাধ্যমে পরে সিদ্ধান্তটি ভুল প্রমাণিত হয়, সে ক্ষেত্রে কী হবে, সেটি কিন্তু আইনের কোথাও লেখা নেই।
বাংলাদেশের ইনিংসের ৪৩তম ওভারে বোলার দেবেন্দ্র বিশুর বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে উইন্ডিজ ক্রিকেটারদের ধোঁয়াশায় ফেলে দেন মুশফিক। বল মুশফিকের প্যাডে লেগেছে- এমনটি মনে হওয়ায় বোলার-ফোল্ডাররা আউটে আবেদন জানান। আউট মনে করে তর্জনী উঁচিয়ে আম্পায়ারও দেন মুশফিকের বিদায়ের সংকেত।
কিন্তু আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সম্মতি ছিল না মুশফিকের। রিভিউ নিলে দেখা যায়, আসলেই আউট হননি মুশফিক। ফলে সে যাত্রায় বেঁচে যান ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
তবে এ নিয়েই বিতর্ক দানা বাঁধে ম্যাচ শেষে। এর কারণ, ঐ বলে মুশফিকের ব্যাটের কানায় লাগা বল (দেখে মনে হয়েছিল প্যাডে লেগেছে) উইকেটরক্ষকের পাশ দিয়ে চলে যায় সীমানার বাইরে। আম্পায়ার আউটের ভুল সিদ্ধান্তটি না দিলে বাংলাদেশের এক্ষেত্রে চার রান যোগ হত। আর বাংলাদেশ যে ব্যবধানে ম্যাচ হেরেছে (৩ রান), তা এই ৪ রানের চেয়েও কম।
ম্যাচ শেষে তাই সমালোচনা চলছে এ নিয়ে। ক্রিকেট বোদ্ধাদের দাবি, আম্পায়ার ঐ ভুল সিদ্ধান্ত না দিলে বাংলাদেশের ইনিংসে যোগ হত আরও চারটি রান, যা দূর করতে পারত পরাজয়ের আক্ষেপ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৯.৩ ওভারে ২৭১ (গেইল ২৯, লুইস ১২, হোপ ২৫, হেটমায়ার ১২৫, জেসন ১২, পাওয়েল ৪৪, হোল্ডার ৭, নার্স ৩, পল ৪, বিশু ০, জোসেফ ১*; মাশরাফি ১/৪৪, মিরাজ ১/৪০, মুস্তাফিজ ২/৪৪, মোসাদ্দেক ০/৩১, সাকিব ২/৪৫, রুবেল ৩/৬১)।
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৬৮/৬ (তামিম ৫৪, এনামুল ২৩, সাকিব ৫৬, মুশফিক ৬৮, মাহমুদউল্লাহ ৩৯, সাব্বির ১২, মোসাদ্দেক ৩*, মাশরাফি ১*; জোসেফ ১/৫৫, হোল্ডার ১/৬৬,নার্স ১/৩৪, পল ১/৪৩, গেইল ০/২৬, বিশু ১/৩৯)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা
ম্যান অব দা ম্যাচ: শিমরন হেটমায়ার