সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান মিয়ানমারের



সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বকে বিচারের আহবান জানিয়ে দেওয়া জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার।

মিয়ানমারে সরকারের একজন মুখপাত্র জ তে বলেছেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে’, সেটি তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

চীনও এই প্রতিবেদন বাতিল করে দিয়ে বলেছে, মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করা হলে সেটি সঙ্কট সমাধানে ‘সহায়ক হবে না।’

সরকারি মুখপাত্র জ তে এক বিবৃতিতে বলেছেন, মিয়ানমারের সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা কখনোই সহ্য করে না।

গত সোমবার জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। তার দু’দিন পর মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে এভাবেই তার জবাব দেওয়া হলো।

এর আগেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা শুধু জঙ্গি সন্ত্রাসী ও বিদ্রোহীদের ওপর অভিযান পরিচালনা করছে।

মিয়ানমারের সাথে যে দেশটির ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে সেই চীনও বলেছে, “ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং জাতিগতভাবে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি খুবই জটিল।”

“শুধুমাত্র মিয়ানমারের সমালোচনা করলে কিম্বা এবিষয়ে দেশটির উপর চাপ প্রয়োগ করলে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে তা সহায়ক হবে না,” বলেছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র হুয়া চুনিং।

গত বছরের অগাস্ট মাসে মিয়ানমারে পুলিশের কয়েকটি চৌকিতে জঙ্গি হামলার পর সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যে অভিযান চালাতে শুরু করে এবং তারপর থেকে বাংলাদেশে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। নিহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

এই অভিযানের সময় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও অভিযোগ উঠেছে যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং বাড়িঘর ও জমিজমায় অগ্নিসংযোগ।

মিয়ানমার সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে অবৈধ অভিবাসী যারা দেশটির নিরাপত্তা এবং বৌদ্ধদের আত্মপরিচয়ের জন্যে বড় ধরনের হুমকি।

জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে সামরিক বাহিনীর ছ’জন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছেন সেনাপ্রধান মিন অং লাইংও। জেনারেলদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাদের বিচারেরও দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনটির প্রকাশিত হওয়ার দু’দিন পর সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হেলি বলেছেন, সঙ্কটের এক বছর পর জাতিসংঘ কী ধরনের উদ্যোগ নেয় সেটা দেখতে সারা বিশ্ব জাতিসংঘের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

মিয়ানমারের দূত বলেছেন, সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে একটি ইতিবাচক ও গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন। আর চীনা দূত সঙ্কট সমাধানে আরো কূটনৈতিক উদ্যোগের উপর জোর দিয়েছেন।

বিবিসি

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!