চারটি পর্বে সাজানো অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি ইকবাল হোসেন বুলবুল,কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ, মোস্তফা জামান চৌধুরী নিপুণ ও হেনা বেগম। মহান মুক্তি যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করে একমিনিট নীরবতা পালন করে শুরু হয় অনুষ্ঠান ।তারপর পরিবেশন করা হয় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত ।
অনুষ্ঠানে বৃন্দ আবৃত্তি উপস্থাপন করেন যথাক্রমে কণ্ঠ প্রবাস, ছান্দসিক, ডকল্যাণ্ডস থিয়েটার এণ্ড পারফর্মিং আর্টস, কথন ও ধ্বনি আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীবৃন্দ। সংগীত পরিবেশন করে সত্যেন সেন স্কুল অব পারফরমিং আর্টস-এর এক ঝাঁক শিশু-কিশোর।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী বলেন, বিলেতে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির একটা বড় ঘাঁটি গড়ে উঠেছিল। এটাকে কেউ কেউ ব্যক্তি স্বার্থে ভাঙ্গার চেষ্টা করেছেন। আর এ ভাঙ্গার ফলে এখানে জামাতীরা অর্থাৎ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি অত্যন্ত শক্তিশালী হচ্ছে ।আমাদের ঐক্যের যে ভাঙ্গন তার সুযোগ নিচ্ছে। এ সম্বন্ধে আপনারা দয়া করে সজাগ থাকবেন।
তিনি আরো বলেন, যারা সত্যি সত্যি বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসেন, স্বাধীনতাকে ভালবাসেন, যারা দেশপ্রেমী তারা একটা মন্চে থাকা উচিত। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় আলাদা থাকতে পারে, আমি আওয়ামীলীগ করতে পারি, আপনি ন্যাপ করতে পারেন, আরেকজন জাসদ করতে পারে কিন্তু এরা সকলেই স্বাধীনতার মন্ত্রে দিক্ষীত। তারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ লণ্ডনে কারো পক্ষেই বিভেদ সৃষ্টি করা সম্ভব হবেনা।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদের বার বার ভাঙ্গনের কথা উল্লেখ করে আব্দুল গাফফার চৌধুরী আরো বলেন, এ পর্যন্ত দুইটা সাংস্কৃতিক পরিষদ হয়েছে। যিনি এগুলো করেন তিনি ইতিপূর্বে উদীচী ভেঙ্গেছেন। তারপর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ভেঙ্গেছেন। এবং সর্বত্রই তিনি নিজে সভাপতি হন এবং নানারকম কাজ করেন যাতে প্রগতিশীল সংস্কৃতিসেবিদের ঐক্য না হয়ে আরো ভাঙ্গে। যারা সম্মিলিত নাম দিয়ে ভেজাল সংগঠন তৈরি করে তিনি তাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
শামীম আজাদ জাতির আত্ম-নির্ণয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমার নিজের ভিতরে একেবারে নিজস্ব একজন বঙ্গবন্ধু আছেন যিনি দুর্যোগে আমাকে সাহস দেন, প্রতিকূলতা মোকাবেলায় আমাকে অনুপ্রাণিত করেন দৃঢ় পদক্ষেপে জীবনের পথে হাঁটতে।আমার বঙ্গবন্ধু আমাকে ছায়া হয়ে আগলে রাখেন সবসময়; বিরুদ্ধ সময়ে আমাকে পথ দেখান সত্য ও সুন্দরের।
হামিদ মোহাম্মদ তার বক্তব্যে বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার দাবী জানান।
বৃন্দ আবৃত্তিতে ধ্বনির পক্ষ থেকে আবৃত্তি পরিবেশন করেন মোস্তফা জামান চৌধুরী নিপুণ, তৌহিদ শাকীল ও শহিদুল ইসলাম সাগর, ডকল্যান্ডস থিয়েটার এন্ড পারফর্মিং আর্টস-এর পক্ষ থেকে আফরোজা বেগম,রাশেদুল কবির , শরিফুল ইসলাম ও স্মৃতি আজাদ , কথন’র পক্ষ থেকে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন ফয়জুল ইসলাম ফয়েজনূর ও হাসিনা আক্তার। ছান্দসিক এর পক্ষ থেকে আবৃত্তি করেন জিয়াউর রহমান সাকলেন ও শতরূপা চৌধুরী অন্যা ।এছাড়াও একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন ইয়াসমিন সুলতানা পলিন, নাজমুল হোসেন, সায়মা আহমেদ,সৈয়দ রুম্মান ও উর্মী মাজহার। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন খয়রুজ্জামান খসরু,রুকন আহমেদ, মুহাম্মাদ শরীফুজ্জামান, সারওয়ার-ই আলম, এম মোসাইদ খান ,হাফসা ইসলাম, শাহ সোহেল আমিন,তানিয়া জাহান ঝর্ণা ও মোহাম্মদ মুহিদ । স্বরচিত ছড়া পাঠ করেন শাহাদত করিম, জুসেফ খান ও হিলাল সাইফ। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র লন্ডনের পক্ষে স্বঅনুবাদিত গ্রন্থ থেকে পাঠ করেন ফারাহ নাজ।
দেশাত্ববোধক সংগীত পরিবেশন করেন শর্মীলা দাশ,শম্পা দেওয়ান,স্বরলিপি দত্ত, শতরুপা চৌধুরী অন্যা ,সৈয়দ আরভিন জামান আরাভ এবং সত্যেন সেন পারফর্মিং আর্টস স্কুল-এর শিশু শিল্পীবৃন্দ। নৃত্য পরিবেশন করেন তাল তরঙ্গের সাকিবা চৌধুরী।
এছাড়া যে সকল সংগঠনের প্রতিনিধিরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তারা হচ্ছেন সংহতি সাহিত্য পরিষদ,বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ডকল্যান্ডস থিয়েটার এন্ড পারফর্মিং আর্টস, ধ্বনি, রবীন্দ্র পর্ষদ, মিনা বাজার, রেডব্রীজ মেলা, মহুয়া আর্টস, কবিতা পরিষদ, তাল তরঙ্গ, তানপুরা, শব্দপাঠ, তৃতীয় ধারা, মূলধারা,সাপ্তাহিক সুরমা, ইউরো বিডি, ইমোহার্ক, কবিতা পরিষদ, তানপুরা, শব্দপাঠ, তৃতীয় ধারা,প্রবাস প্রকাশনী, আশা প্রকাশনী, কবিতা স্বজন, স্বাধীনতা ট্রাস্ট, গ্রন্থী, পাক্ষিক ব্রিক লেন, ব্রিটিশ-বাংলাদেশী পয়েট্রি কালেকশন, হৃদি, কবিকণ্ঠ, প্রগতি লেখক সংঘ, বঙ্গবন্ধু রাইটার্স অ্যান্ড জার্নলিস্ট ফোরাম, অধ্যায়, পলল, বঙ্গবন্ধু বইমেলা, পুনশ্চ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক ফোরাম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট সেন্ট্রল লন্ডন শাখা, লাইট সাউন্ড অ্যান্ড ক্যামেরা, সুরালয়, বার্মিংহাম সাহিত্য পরিষদ, বার্মিংহাম উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, কারি লাইফ ম্যাগাজিন, দর্পণ ম্যাগাজিন, বেতার বাংলা, বেতার বাংলা শ্রোতা ফোরাম, শিল্পকলা একাডেমি লন্ডন, মাসিক অভিমত। এছারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড. মুকিদ চৌধুরী,কবি আতাউর রহমান মিলাদ, কবি মিলটন রহমান,কবি ফারুক আহমেদ রনি, নুরুল ইসলাম,আবুল কালাম আজাদ ছোটন, বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী চায়না চৌধুরী, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী গোপাল দাস , ছড়াকার আবু তাহের, লেখক আনোয়ার শাহজাহান, কবি শামীম আহমেদ, কবি ও গীতিকার শামসুল জ্বাকী স্বপন, রুহুল আহমেদ, জামাল খান, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সাগর রহমান সহ বিভিন্ন শহর থেকে আসা বিশিষ্ট সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব, কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক বৃন্দ । হল ভর্তি শ্রোতার উপস্হিতিতে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান টি বিকেল ৬:৩০ মিনিটে শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে রাত ১১ টা পর্যন্ত চলে।