দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, তার সাথে উৎপাদন না বাড়া ও যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে পড়তে হয় এই এলাকার জনগনকে। তাই গরম থেকে পরিত্রান পেতে অনেকেই গ্রামাঞ্চলে হাত পাখা ঘুরান। আর তাতেই তারা পান পরম শান্তি।
ফেঞ্চগঞ্জ ঘিলাছড়া ইউনিয়নের যুদিষ্টিপুর ও ঘিলাছড়া গ্রামের বেশ কিছু বাড়িতে বেতের তৈরি হাত পাখা তৈরি হয়ে থাকে। জৈষ্ঠের দাবদাহ গরম থেকে রক্ষা পেতে গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য এসব হাত পাখা তৈরি করা হয়।
আজ থেকে পনের বা বিশ বছর আগে ও সকল গ্রামে বা বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। তখন গরমে এক মাত্র ভরসা ছিল হাত পাখা। যা সেই এলাকার মানুষ এখন তাদের ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রেখেছেন। তখনকার সময় বেশ ভাল বেচা বিক্রি হতো। এখন তেমন আর আগের মতো চাহিদা নাই। যা চাহিদা আছে তাতে আর পোষায় না পাখা তৈরি করে।
একটি বেতের বাঁশ কিনতে হয় ২০০/২৫০টাকায়। বেত তুলে রং করে শুকিয়ে বানানোর পর বিক্রি করতে হয় মাত্র ১৫/১৬টাকায়। সেই হিসাবে ১০০ পিছ এর দাম হয় পনেরশ বা ষোলশ টাকা। তাথে খুব একটা পোষায় না বলে জানান পাখা তৈরি করে বিক্রেতা আজিমুন বেগম।
সরজমিনে পাখা ক্রয় করে আসার পথে দেখা হয় পাখা ফেরিওয়ালা আব্দুস সামাদের সাথে। কথা হলে তিনি জানান, বেশ কয়েক বছর থেকে তিনি
এই এলাকার হাত পাখা বিক্রি করছেন। তার বাড়ি ও ঘিলাছড়ায়, তিনি প্রতি পিছ পাখা ১৫/১৬ টাকায় কিনেন আর বিক্রি করেন ৩০/৩৫ টাকায়। তিনি বলেন, আগের মতো এখন আর পাখা চাহিদা নেই। আগে প্রতি দিন ৫০/৬০পিছ পাখা বিক্রি হতো। এখন ৩০/৪০ পিছ দুই দিনে বিক্রি কঠিন হয়ে যায়। আর কারিগররা ও তাদের দামে পোষায় না বলে অনেকেই এই কাজ বাদ দিয়ে দিছেন। তিনি আরো বলেন, আগে বেশ কিছু ফেরিওয়ালা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে হাতের তৈরি পাখা নিয়ে যেত। এখন আর বাহিরের কেউ আসে না, তাই তারা ও আর পাখা বানাতে উৎসাহ পান না। তিনি এই পাখা তৈরি শিল্প টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন।
এদিকে সুশিলসমাজের অনেকে মনে করেন, সরকারের ক্ষুদ্র ঋণদান ও এলাকার সকলের সার্বিকভাবে সহযোগিতা এলাকার ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।