প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। মুহতারাম, আমার প্রশ্নগুলো হলো-১। কাপড়ে সামান্য প্রস্রাব বা বীর্য লেগে শুকিয়ে গেলে এবং এ নাপাকীর কোনো চিহ্ন কাপড়ে না দেখা গেলে ঐ কাপড় দিয়ে কি নামায আদায় করা যাবে? ২। শুচিবায়ুতে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি প্রস্রাবের বা কামভাবের অনবরত সমস্যার কারণে নামাযের মধ্যে প্রস্রাব বা বীর্য বের হয় তবে উক্ত অবস্থায় তার নামায আদায় করা বৈধ হবে কি?
উত্তর :
ওয়া আলাইকুমুস সালাম।
১। যদি প্রস্রাব বা বীর্য এক দেরহাম (গোলকৃত ভাবে একটা কাঁচা টাকা অর্থাৎ হাতের তালুর নীচ স্থান পরিমানের সমান) পর্যন্ত শরীর বা কাপড়ে লাগে তবে মাফ। মাফের অর্থ হল স্বেচ্ছায় বা বিনা ওযরে এ পরিমান সহ নামায আদায় করলে মাকরূহের সাথে নামায আদায় হবে। আর এক দিরহামের চেয়ে বেশি লাগলে তা নিয়ে নামায পড়লে নামায হবে না।–আদ্দুররুল মুখতার ৩১৬; আল বাহরুর রায়েক ১/১২৫
২। যদি উক্ত ব্যক্তির প্রস্রাব বা বীর্য অনবরত এমনভাবে আসতে থাকে যে, নামাযের কোন একটি পূর্ণ ওয়াক্তের মধ্যে এতটুকু সময়ও বিরতি হয় না, যার মধ্যে সে শুধু অজুর ফরজ অঙ্গগুলো ধুয়ে সংক্ষেপে ফরজ নামায আদায় করতে পারে তবে সে মাযূর গণ্য হবে। পরবর্তী ওয়াক্ত সমূহে উক্ত ওযর একবার পাওয়া গেলেও সে মাযূর থাকবে। পুরো ওয়াক্ত জুড়ে আসা জরুরী নয়। তবে কোন ওয়াক্তের মধ্যে যদি উক্ত ওযর একবারও দেখা না যা তখন সে আর মাযূর বলে গণ্য হবে না। এরূপ ব্যক্তির হুকুম হল, সে প্রত্যেক নামাযের ওয়াক্তে নতুন অজু করবে। ঐ ওয়াক্ত যতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার অজু বহাল থাকবে অর্থাৎ উক্ত প্রস্রাব বা বীর্যের কারনে তার অজু ভঙ্গ হবে না। তবে উক্ত কারন তথা প্রস্রাব বা বীর্য ব্যতীত অজু ভঙ্গের অন্য কোন কারন ঘটলে অজু ভেঙ্গে যাবে।
আর প্রস্রাব বা বীর্য কাপড়ে লাগার পরে যদি মনে হয় নামায শেষ হবার পূর্বেই আবার লেগে যাবে তবে তা ধৌত করা ওয়াজিব নয়। অন্যথায় পাক কাপড়ে নামায আদায় করতে হবে।–ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪০; মারাকীল ফালাহ, পৃষ্ঠা ১৪৯
উত্তর প্রদান করেছেন – মুফতি আবুল হুসাইন, প্রধান মুফতি ও মুহাদ্দিস, আল-জামেয়াতুল ইসলামিয়া আশরাফুল উলূম মাদরাসা, নড়াইল।
সৌজন্যে : পরিবর্তন