কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার পর হত্যার ঘটনায় মো. রাজীব ওরফে বুলবুল (২৮) নামে এক যুবককে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় হত্যাকারী মো. রাজীব ওরফে বুলবুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বুলবুল পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরটেকী কোনাপাড়া গ্রামের সোহরাব উদ্দিনের ছেলে। অন্যদিকে নিহত মো. সুমন মিয়া একই এলাকার মাহতাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন।
মানবজমিন সূত্রে মামলার বিবরণে জানা যায়, নিহত সুমন ও মো. রাজীব ওরফে বুলবুল ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। এই সুবাদে ২০১৫ সালের ৬ই জুলাই রাত ১০টার দিকে রাজীব কাজ আছে বলে মোবাইল ফোনে সুমনকে চরটেকী নামাপাড়া এলাকার পতিত জমিতে ডেকে নিয়ে যায়।
জমিতে মো. রাজীব তার গামছা বিছিয়ে বেশ কিছুক্ষণ দু’জনে কথাবার্তা বলে। একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে রাজীব তার বন্ধু সুমনের সঙ্গে থাকা দুই হাজার ৮শ’ টাকা এবং এক হাজার ৮শ’ টাকা মূল্যের নকিয়া ব্র্যান্ডের একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার জন্য গলায় গামছা পেঁচিয়ে মাটিতে শুইয়ে ফেলে। পিঠের ওপর চড়ে বসে সজোরে গলায় গামছা দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
পরে সুমনের নিথর দেহ রাজীব ওরফে বুলবুল কাঁধে করে বাড়ি সংলগ্ন চাচা আমির উদ্দিনের পুকুরপাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে সুমনের নিথর দেহে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে লাশ চাচা আমির উদ্দিনের বাথরুমের ট্যাংকির মধ্যে ফেলে রেখে টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায় রাজীব ওরফে বুলবুল।
ঘটনার একদিন পর ৮ই জুলাই দুপুরে জনতার সহায়তায় পুলিশ রাজীবকে আটক করলে তিনি ঘটনার বিশদ বিবরণ দেন এবং তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাথরুমের ট্যাংকির মধ্য থেকে সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ওইদিনই নিহত সুমন মিয়ার মা মোছা. শিউলী আক্তার বাদী হয়ে পাকুন্দিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এছাড়া আসামী রাজীব ওরফে বুলবুল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. শাহাব উদ্দিন ওই বছরেরই ১৫ই ডিসেম্বর রাজীব ওরফে বুলবুলকে একমাত্র আসামী করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সাক্ষ্য-জেরা শেষে আজ চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।