শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) মধ্য লণ্ডনে এক সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত দুইজন নিহত এবং আরো কয়েক জন আহত হয়েছেন। লণ্ডন ব্রিজের উত্তরের অংশে একটি হলে চলতে থাকা এক অনুষ্ঠানে এ হামলার সূত্রপাত হয়। ছুরিকাঘাতে একজন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হয়েছেন, তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এই ঘটনায় আরো তিনজন আহত হয়েছে।
অবশ্য ছুরি নিয়ে কয়েক জন ব্যক্তির ওপর হামলার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই জনগণের সহায়তায় এবং পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন হামলাকারী ও নিহত হন। নিহত ব্যক্তি ভুয়া বিস্ফোরকের ডিভাইস পড়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ নিশ্চিত করেছে তার নাম উসমান খান এবং তার বয়স ছিল ২৮। হামলাকারী সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে এর আগে কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন। পুলিশ তার গতিবিধির ওপর নজর রাখবে – এমন শর্তে একবছর আগে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান।
নভেম্বরের শুরুতে যুক্তরাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার মাত্রা কমিয়ে দেয়ার একমাসের মধ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটলো।
এদিকে হামলাকারী সম্পর্কে পুলিশ জানিয়েছে, উসমান খান নামের ওই ব্যক্তিকে ২০১২ সালে সন্ত্রাসের দায়ে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। জনসুরক্ষার জন্য তাকে অন্ততপক্ষে আট বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে, তিনি লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বোমা হামলার পরিকল্পনা করেছেন। মোট নয়জনের ওই গ্রুপটি আরো কিছু হামলার পরিকল্পনা করেছিল।
২০১৩ সালে আপিল আদালত ওই রায় বাতিল করে তাকে ১৮ বছরের কারাদণ্ড দেয়, যার মধ্যে অন্তত অর্ধেক সময় কারাগারে কাটাতে হবে।
আল-কায়েদার আদর্শে উদ্বুদ্ধ মি. খান এমআই-ফাইভের নজরদারির মধ্যে ছিলেন।
যুক্তরাজ্যের কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের প্রধান নেইল বসু বলছেন, ”২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি কারাগার থেকে এই শর্তে ছাড়া পান যে, তার গতিবিধির ওপর পুলিশ নজর রাখবে। কীভাবে তিনি এই হামলা চালালেন, তা নিয়ে এখন তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”
স্ট্যাফোর্ডশায়ারে যেখানে মি. খান বসবাস করতেন, সেখানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
”ঘটনার সব দিক এখনো পরিষ্কার নয়। এর সঙ্গে কে বা কারা জড়িত রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে সব দিক খতিয়ে দেখা হবে,” বলেছেন মি. বসু।
টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে, এক বছর আগে যখন তাকে কারাগার থেকে ছাড়া হয়, তখন শর্ত ছিল যে, তার শরীরে একটি ইলেকট্রনিক ট্যাগ লাগানো থাকবে, যার মাধ্যমে তার গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হবে।
এর আগে ২০১৭ সালের চৌঠা জুন লণ্ডন ব্রিজ ও বারো মার্কেটে হামলা করা হয়েছিল, যাতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছিলেন।
বিবিসি