বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওসমানীনগরে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত : প্রধান শিক্ষক বহাল তবিয়তে, বলির পাঁঠা দপ্তরি



সিলেটের ওসমানীনগরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপ-বৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় শুধুমাত্র দপ্তরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা শিক্ষা অফিস। এদিকে, অভিভাবকরা বলছেন- টাকা আত্মসাতে প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

জানা যায়- উপজেলার গোয়ালাবাজার পাটুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০৯ জন উপ-বৃত্তিধারী শিক্ষার্থীর ২০২০ সালের (জুলাই-ডিসেম্বর) ৬ মাসের টাকা অভিভাবকদের মোবাইলে এসে জমা হয়। নগদ একাউন্টে টাকা জমার পরপর বিদ্যালয়ে কর্মরত দপ্তরি আখতার হোসেন শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভুল বুঝিয়ে অভিভাবকদের মোবাইলের একাউন্ট থেকে উপ-বৃত্তির টাকাগুলো নিজ একাউন্টে ট্রান্সপার করেন। পরে কাউকে অর্ধেক আবার কাউকে না দিয়েই কয়েক হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।

গত ১৬ই জুন বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় দপ্তরি আখতার হোসেন নিজের দোষ স্বীকার করে উপস্থিত অভিভাবক ও এলাকাবাসীকে জানান- বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমানের প্ররোচনায় তিনি এই কাজটি করে আসছেন। প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্যগণ তখন তড়িঘড়ি করে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপময় দাশ চৌধুরী ও ছানাউল হক সানিকে নিয়ে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গত ২১ জুন ঘটনায় খতিয়ে দেখতে পাটুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায় তদন্ত কমিটি। এ সময় অভিভাবক ও এলাকাবাসী উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান জড়িত বলে জানালেও তাতে কর্ণপাত করেনি তদন্ত কমিটি। পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়।

এদিকে, পাটুলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপ-বৃত্তির টাকা আত্মসাতে বিদ্যালয়ের দপ্তরির পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকও জড়িত দাবি করে গত ২৩ জুন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী। পাশাপাশি তারা প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমানের অতীতের নানা অনিয়মও তুলে ধরেন।

এদিকে, উপ-বৃত্তিধারী শিক্ষার্থীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দপ্তরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বায়েজিদ খান কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা গত ৩০ জুন উপজেলা শিক্ষা অফিসে এসে পৌঁছায়। এতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো সুপারিশ করা হয়নি। এ ঘটনায় এলাকার অভিভাবকদের মধ্যে আবারও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফ মো. নেয়ামত উল্ল্যা বলেন- জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বায়েজিদ খান মহোদয়ের স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা বুধবার বিকালে আমরা পেয়েছি। এতে পাটুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি আখতার হোসেন কর্তৃক আত্মসাৎকৃত উপ-বৃত্তির টাকা ফেরত নেওয়াসহ তার চাকরির চুক্তি বাতিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!