বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বালাগঞ্জে তীব্র আকার ধারণ করেছে লোডশেডিং, অতিষ্ঠ জনজীবন



বালাগঞ্জে তীব্র আকার ধারণ করেছে লোডশেডিং, তাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। প্রতিদিন ১ থেকে ২ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কথা থাকলেও বিদ্যুৎ থাকছে না অধিকাংশ সময়।

গত মঙ্গলবার সকাল থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) পর্যন্ত অন্তত শতবার বিদ্যুত যাওয়া-আসা করেছে। এতে করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজকর্মসহ সর্বসাধারনের স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হচ্ছে।

এছাড়া ঘন ঘন বিদ্যুতের যাওয়া-আসার কারণে অনেক বাসা-বাড়িতে টিভি, ফ্রিজসহ ইলেট্রনিক্স যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। এতে
গ্রামগঞ্জে, হাঠ-বাজারে সবশ্রেণী-পেশার লোকজন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

জানাগেছে, সম্প্রতি জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সরকার
গত মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) থেকে সাময়িকভাবে সারাদেশে এলাকা ভিত্তিক ২ ঘন্টা করে লোডশেডিং করা বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।

গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেছিলেন, জ্বালানি তেলের লোকসান কমাতে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় লোডশেডিং থাকবে, তা আগেভাগে জানিয়ে দেয়া হবে এবং দিনে অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং থাকবে।

তবে, বাস্তবে বালাগঞ্জ উপজেলায় ভিন্নরুপ ধারণ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ । উপজেলায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। দিনরাতে কমপক্ষে ৩০থেকে ৩৫ বার বিদ্যুৎ যায় আসে। এতে একদিকে সরকারের নির্দশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্যদিকে জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

তাই এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকি ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে জোরদাবি জানিয়েছেন – আজিজপুর বাজারের ব্যবসায়ী ডা. এনামুল হক, বালাগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ি রিপন দাস, মাদ্রাসা বাজারের ব্যবসায়ি আছলাম খান, সুহেল বারী, শফিকুল ইসলাম শফিক প্রমুখ।

তারা বলেন, সরকারের নিদের্শনাকে উপেক্ষা করে বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের মনগড়া অবিরাম লোডশেডিং করে যাচ্ছে। বর্তমান বিদ্যুত ব্যবস্থা যে অবস্থায় পৌছেছে তাতে অসুস্থ ব্যক্তি, শিশু এবং বৃদ্ধসহ সর্বসাধারণ যেন শ্বাসরুদ্ধ । আমরা এই অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য মাননীয় এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে জোরদাবি জানাচ্ছি।

দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এণ্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, প্রচন্ড গরমের মধ্যে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিভ্রাট সহ্য করা যায় না। জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে, আশু সমাধান প্রয়োজন।

দেওয়ানবাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক আলহাজ্ব এমএ মালেক বলেন, আন্তর্জাতিক সংকট মোকাবিলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময়োপযোগি সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমাদের এলাকায় প্রতিদিন কিছুক্ষণ পরপর বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে মানুষকে চরম কষ্ট দেয়া হচ্ছে। ২ থেকে ৪ ঘন্টাও যদি বিদ্যুৎ ধারাবাহিক থাকতো তাতেও তেমন অসুবিধার ছিলনা , কিন্তু বর্তমানে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ থেকে ২০ ঘন্টা লোডশেডিং এর নামে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এতে জনসাধারণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার কোন ষড়যন্ত্র হচ্ছে কি-না, তা খতিয়ে দেখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এদিকে আলাপকালে – মাদ্রাসাবাজার পল্লীবিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. বিল্লাল হোসেন জানান, বর্তমানে ডিজেল চালিত সকল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে।

ওসমানী নগর জোনাল অফিসের ডিজিএম মুজিবুর রহমান দাবি করেন সিডিউল অনুযায়ি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। লোডশেডিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিটিংএ আছি পরে কথা বলবো।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!