সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) লেবাননের বিপক্ষে হারলো বাংলাদেশ। প্রথমার্ধ গোলশূন্য সমতায় হলেও দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল হজম করে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। বাংলাদেশ হারে ২-০ গোলে।
লেবানন র্যাঙ্কিংয়ে ৯৩ ধাপ এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষ হওয়ায় বাংলাদেশ মাঠে নেমেছিল বাস্তবতা মাথায় নিয়ে। ফলে টুর্নামেন্টের অতিথি দলটির বিপক্ষে ন্যূনতম এক পয়েন্ট আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। ৭৯ মিনিট পর্যন্ত সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে চোখে চোখ রেখেও খেলেছে। কিন্তু পরের মিনিটে হয়েছে সর্বনাশ। সুযোগ পেয়েই শেষ দিকে দারুণ দুটি গোল করে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় লেবানন।
বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তীরাভা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধটা ছিল জমজমাট। এই অর্ধে লেবাননকে গোল করতে দেয়নি লাল-সবুজ দল। বরং তাদের বিপক্ষে চোখ রাঙানি দিয়ে খেলেছে। বিরতির আগ পর্যন্ত দুই দলই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল উপহার দিয়েছে। কেউ গোলের দেখা পায়নি যদিও।
লেবাননের আক্রমণাত্মক ফুটবলের বিপরীতে বাংলাদেশ রক্ষণ জমাট করে খেলেছে। পাশাপাশি প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে ছড়িয়েছে ভীতি। ম্যাচ ঘড়ির ১৫ মিনিটে লেবানন প্রথম সুযোগটি পায়। করিম দারউইচের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে গেছে।
২১ মিনিটে সবচেয়ে ভালো সুযোগটি নষ্ট করে বাংলাদেশ। ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ডান প্রান্তের ক্রসে সুমন রেজা হেড করার আগেই গোলকিপার হাত দিয়ে সেটি প্রতিহত করলে পাওয়া হয়নি। পরের মিনিটে জামালের দূরপাল্লার শট গোলকিপার তালুবন্দি করেছেন।
৩৫ মিনিটে আবারো আক্রমণে যায় লেবানন। আলিআল হাজ কোনাকুনি শট নিলেও গোলকিপার জিকো হাত দিয়ে সেটি প্রতিহত করেছেন। ৪৩ মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে জোরালো শট নিলেও তা পোস্টের বাইরে দিয়ে গেছে। এর আগে লেবানন ম্যাচে অভিষেক হয়েছে ইসা ফয়সালের। রয়েছেন ডিফেন্ডার কাজী তারিক রায়হানও।
লেবাননের বিপক্ষে ৪-৩-২-১ ছকে খেলা বাংলাদেশ বিরতির পর পরিবর্তন আনে তিনটি। ৫৭ মিনিটে হাভিয়ের কাবরেরা জনির জায়গায় মোরসালিন, জামালের জায়গায় নামান হৃদয়কে। রবিউলকে নামান সুমন রেজার জায়গায়। তাতে ৬০ মিনিটে ম্যাচের সেরা সুযোগটিও আসে। কিন্তু নিজেদের অর্ধ থেকে হৃদয়ের লং পাসে বক্সে ঢুকে কিপারকে একা পেলেও ফাহিমের শট রুখে দেন তিনি। শেষের দিকে প্রতি আক্রমণ থেকে দুটি গোল আদায় করে নেয় লেবানন। ৭৯ মিনিটে তারিক কাজীর ভুলের চড়া মাশুল দিতে হয় বাংলাদেশকে। ডারউইচের আড়াআড়ি পাসে হাসান মাতুক প্লেসিং শটে জিকোকে পরাস্ত করেছেন। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন খলির বাদের। প্রতি আক্রমণ থেকে দ্বিতীয় গোল করে বাংলাদেশকে ছিটকে দেন ম্যাচ থেকেই।
দুই দেশের এটি তৃতীয় ম্যাচ। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে বাংলাদেশ ৪-০ গোলে হারে লেবাননের কাছে। ফিরতি ম্যাচে ঢাকায় জেতে ২-০ গোলে। ১২ বছর পর আরেকটি লড়াইয়ে ড্রয়ের আশা জাগিয়ে বাংলাদেশ হারলো ২-০ ব্যবধানে। বলা যায় এই হার পুরো ৯০ মিনিট সমানতালে খেলতে পারার সামর্থ্যের অভাবেই।
বাংলাদেশ একাদশ: আনিসুর রহমান, তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ঘোষ, তারিক কাজী, ফয়সাল আহমেদ, জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা, মজিবর রহমান, মেহেদী হাসান, সোহেল রানা ও সুমন রেজা।