তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে লড়াইটা ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর, একই সঙ্গে নিউ জিল্যাণ্ডের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পাওয়ার। দুটি লক্ষ্যেই সফল বাংলাদেশ। নিউজিল্যাণ্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে নাজমুল হোসাইন শান্তর দল। আর টানা ১৮ হারের পর কিউইদের মাটিতে ওয়ানডেতে এবারই প্রথম জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ৯৯ রান তাড়া করতে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে ১৫.১ ওভারেই জয় পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনে নামা সৌম্য সরকার ইনিংসের শুরুতে চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। পানি দিয়ে ফিজিওর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েও ঠিক হচ্ছিল না। এরপর ১৬ বলে ৪ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন। সৌম্যর ওপেনিং–সঙ্গী এনামুল হক অবশ্য ইনিংসের শুরুর চাপটা কাউকে অনুভব করতে দেননি। নিউ জিল্যাণ্ডের বোলাররা উইকেটের আশায় আক্রমণাত্মক বোলিং করার চেষ্টা করেছেন। তিনিও ব্যাট চালিয়ে গেছেন। ইনিংসের ১৩তম ওভারে তিনি যখন আউট হন, তখন ম্যাচটা বাংলাদেশের হাতের মুঠোয়। দলের রান ১ উইকেটে ৮৪, যার মধ্যে ৩৩ বলে ৭টি বাউন্ডারিতে এনামুলের রান ৩৭। বাকি কাজটা করেছেন শান্ত নিজেই। সৌম্যর মাঠ ছাড়ার পর দ্রুত রান তুলেছেন তিনিও। জয়সূচক রানটাও এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। আদি অশোকের করা ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলটাকে কাভারে ঠেলে শান্ত দৌড়ে ২ রান নিলে নিউ জিল্যাণ্ডের ছোট্ট লক্ষ্য টপকে যায় বাংলাদেশ। ওই ২ রানে ক্যারিয়ারের অষ্টম ওয়ানডে অর্ধশতকও স্পর্শ করেন শান্ত। তিনি শেষ পর্যন্ত ৪২ বলে ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন, ৮টি বাউন্ডারি ছিল শান্তর ইনিংসে।
তবে স্মরণীয় জয়ে কৃতিত্ব যতটা না ব্যাটসম্যানদের, তার চেয়ে বেশি বোলারদের। গতিময় বাউন্সি উইকেট পেয়ে নিউ জিল্যাণ্ডের ব্যাটিং রীতিমতো গুঁড়িয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের পেসাররা। স্কোরবোর্ডে একশ রানও তুলতে দেননি নিউ জিল্যাণ্ডকে। শরীফুল-তানজিমের আগুনে বোলিংয়ে কিউইদের ইনিংস থামে ৩১.৪ ওভারে ৯৮ রানে, যা বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ, ঘরের মাঠে চতুর্থ সর্বনিম্ন সংগ্রহ এবং ২০০৭ সালের পর দেশের মাটিতে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। তাই বোলারদের এমন বীরত্বের পর বাকি কাজটা সহজেই সেরে যান ব্যাটাররা। এবং নিউ জিল্যাণ্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে ১৯তম ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের দেখা পেয়ে যান শান্তরা। তাও আবার ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।
ওয়ানডে সিরিজের পর দুই দল খেলবে এবার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ছোট্ট লক্ষ্যে খেলতে নেমে মনে হতে পারে বাংলাদেশ ২০ ওভারের খেলার প্রস্তুতিটাও সেরে নিল!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যাণ্ড: ৩১.৪ ওভারে ৯৮ (ইয়াং ২৬, রবীন্দ্র ৮, নিকোলস ১, ল্যাথাম ২১, ব্লান্ডেল ৪, চ্যাপম্যান ২, ক্লার্কসন ১৬ , মিল্ন ৪, আশোক ১০, ডাফি ১*, ও’রোক ১; শরিফুল ৭-০-২২-৩, তানজিম ৭-২-১৪-৩, মুস্তাফিজ ৭.৪-০-৩৬-১, সৌম্য ৬-১-১৮-৩, মিরাজ ১-০-৩-০, রিশাদ ৩-০-৪-০)।
বাংলাদেশ: ১৫.১ ওভারে ৯৯/১ (সৌম্য আহত অবসর ৪, এনামুল ৩৭, শান্ত ৫১*, লিটন ১*; মিল্ন ৪-০-১৮-০, ডাফি ৫-০-২৭-০, ক্লার্কসন ২-০-১৯-০, ও’রোক ৪-০-৩৩-১, আশোক ০.১-০-২-০)।
ফল: বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যাণ্ড ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: তানজিম হাসান।
ম্যান অব দা সিরিজ: উইল ইয়াং।