রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

ঘুমের ধরন ও স্বাস্থ্যঝুঁকি: গবেষকদের নতুন তথ্য



দিনের ক্লান্তি দূর করার প্রধান ভরসা হলো ঘুম। তবে শুধু ঘুমালেই যথেষ্ট নয়, ঘুম হতে হবে নিয়মিত ও স্বাস্থ্যসম্মত। বাস্তবে আধুনিক ব্যস্ত জীবনযাত্রা, প্রযুক্তি ব্যবহার বা কর্মচাপের কারণে অনেকের ঘুমের ধারা এলোমেলো হয়ে গেছে। কেউ রাত জেগে কাজ করেন, কেউ দিনে বারবার ঘুমান, আবার অনেকে সপ্তাহের দিনগুলোতে ঘুম কমিয়ে ছুটির দিনে দীর্ঘসময় ঘুমিয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করতে চান। অনেকের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে ইনসমনিয়ার সমস্যাও চলে আসছে। এসব অভ্যাস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের ঘুমের চারটি আলাদা ধরন রয়েছে। প্রায় ৩ হাজার ৭০০ জনকে দীর্ঘ ১০ বছর পর্যবেক্ষণ করে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয় আন্তর্জাতিক জার্নাল সাইকোসোমাটিক মেডিসিন-এ।

গবেষণায় চিহ্নিত চার ধরনের ঘুমের ধারা হলো—
১. ভালো স্লিপারস: যাদের ঘুমের ধরণ স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর।
২. ন্যাপারস: যারা রাতে ভালো ঘুমালেও দিনে নিয়মিত ঝিমুনি দেন বা ঘুমান।
৩. উইকেন্ড ক্যাচ-আপ স্লিপারস: সপ্তাহের কর্মদিবসে কম ঘুমিয়ে ছুটির দিনে বেশি ঘুমিয়ে ঘাটতি পূরণ করেন।
৪. ইনসমনিয়া স্লিপারস: যাদের ঘুম আসতে দেরি হয়, কম সময় ঘুম হয় এবং দিনে অতিরিক্ত ক্লান্তি থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ন্যাপারস ও ইনসমনিয়া স্লিপারস গ্রুপে পড়েছেন।

ইনসমনিয়ার ঝুঁকি বেশি

যারা দীর্ঘদিন ধরে ইনসমনিয়ায় ভুগছেন, তাদের মধ্যে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও বিষণ্নতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। গবেষণা দলের প্রধান ডা. সুমি লি বলেন, “একবার ঘুমের ছন্দ নষ্ট হলে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে দৈনন্দিন জীবনে ঘুমের মান উন্নত করা গেলে তা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।”

দিনে ঘুমের অভ্যাসও ক্ষতিকর হতে পারে

চিকিৎসকদের মতে, যারা রাতে যথেষ্ট ঘুমালেও দিনের বেলা নিয়মিত ন্যাপ নেন, তাদের মধ্যেও ভবিষ্যতে নানা ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি তৈরি হয়। এজন্য ঘুমের ধরন বুঝে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঘুম শুধু বিশ্রাম নয়

গবেষকদের মতে, ঘুম কেবল বিশ্রাম নয়; বরং শরীর ও মস্তিষ্কের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অপরিহার্য ধাপ। নিয়মিত ও মানসম্মত ঘুম ভবিষ্যতে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, মানসিক অবসাদসহ নানা রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

উপসংহার: ঘুমের মান ও ঘুমের ধরন—উভয়ই সুস্থ জীবনের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখন থেকেই সচেতন ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!