রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

এই ৫ লক্ষণ দেখলেই বুঝবেন কিডনি ক্যানসারের ঝুঁকিতে আছেন



ছবি সংগৃহীত

কিডনি ক্যানসারকে অনেক সময়ই বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’। কারণ, দেহে রোগটি দীর্ঘদিন সক্রিয় থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর স্পষ্ট কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। ফলে অনেক রোগীর ক্ষেত্রে দেরিতে শনাক্ত হয় এবং চিকিৎসা কঠিন হয়ে পড়ে। অথচ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে কিডনি ক্যানসারের চিকিৎসায় সাফল্যের হার অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সাধারণ লক্ষণ অবহেলা না করলেই সময়মতো রোগ শনাক্ত হওয়া সম্ভব।

১. প্রস্রাবে রক্ত

কিডনি ক্যানসারের সবচেয়ে প্রচলিত লক্ষণ হলো প্রস্রাবে রক্ত দেখা দেওয়া, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় হেমেচুরিয়া বলা হয়। এসময় প্রস্রাব গোলাপি, লাল কিংবা বাদামি রঙ ধারণ করতে পারে। সাধারণত এটি ব্যথাহীনভাবে ঘটে এবং কয়েক দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যায়—যার কারণে অনেকেই গুরুত্ব দেন না। যদিও এটি সংক্রমণ, কিডনির পাথর বা ক্যানসারের ইঙ্গিতও হতে পারে। তাই প্রস্রাবে রক্ত দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।

২. পিঠের নিচে বা পাশের স্থায়ী ব্যথা

সাধারণ পিঠব্যথার সঙ্গে কিডনি ক্যানসারের ব্যথা আলাদা। এ ক্ষেত্রে পিঠের নিচের অংশ বা পাশের দিকে (ফ্ল্যাংক) স্থায়ী ব্যথা অনুভূত হয়। কোনো ধরনের আঘাত ছাড়াই যদি এমন ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে বাড়ে, তবে তা কিডনিতে টিউমারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে মূত্রের রঙ পরিবর্তনের সঙ্গে ব্যথা দেখা দিলে পরীক্ষা করানো খুবই জরুরি।

৩. হঠাৎ অকারণে ওজন কমে যাওয়া

খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাপনে কোনো পরিবর্তন ছাড়াই দ্রুত ওজন কমতে থাকলে তা কিডনি ক্যানসারের আরেকটি সম্ভাব্য লক্ষণ। ক্যানসারের প্রভাবে শরীরের বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হয়, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, ক্ষুধা কমে যায় এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। যদি এর সঙ্গে অতিরিক্ত ক্লান্তিও যুক্ত হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

৪. কিডনির আশপাশে চাকা বা ফোলাভাব

পাঁজরের নিচে বা কিডনির পাশে কোনো ফোলাভাব বা চাকা অনুভূত হলে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত। অনেক সময় হাত দিয়ে স্পর্শ করলে টের পাওয়া যায়, আবার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষায়ও ধরা পড়ে। যদিও সব ধরনের চাকা ক্যানসারজনিত নয়—সিস্ট বা চর্বি জমার কারণেও হতে পারে—তবে ক্যানসার হলে চাকা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। তাই স্ক্যান বা আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে নিশ্চিত হওয়া জরুরি।

৫. দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ও দুর্বলতা

কিডনি ক্যানসারের কারণে অনেক সময় রক্তে লোহিত কণিকা উৎপাদন কমে যায়, ফলে অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। এতে রোগীরা অস্বাভাবিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করেন। বিশ্রাম নেওয়ার পরও যদি অবসাদ না কমে, আর সঙ্গে ওজন কমা বা প্রস্রাবে রক্তের মতো উপসর্গ থাকে—তবে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসা সহজ হয় এবং সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। তাই এসব উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!