উচ্চ হারের রেন্ট-রেইট এবং দৈনন্দিন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে ব্রিটেনের হাইস্ট্রীটের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার মানুষ চাকুরীচ্যুত হয়েছেন। এই সংখ্যা গত বছরের চাইতে চারগুন বেশি। ছোট্ট, বড় আরো অনেক চেইন এবং বিখ্যাত রিটেইলার শপ বন্ধের মুখে রয়েছে। বিখ্যাত ব্রান্ড হাউস অব ফ্রেইজার্স ৫১টি শাখার মধ্যে অর্ধেকই বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ফলে চাকুরীচ্যুতির সংখ্যা বছর শেষে ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধু হাউজ অব ফ্রেইজার্স থেকেই আরো প্রায় ৬ হাজার মানুষ বেকার হবেন। এছাড়া অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলেও আরো প্রায় ৫ হাজার ৮শ ৯৪ জন মানুষ চাকুরীচ্যুত হবে।
এছাড়া হাইস্ট্রীটে বিভিন্ন রেষ্টুরেন্ট থেকেও চাকুরী হারাচ্ছেন মানুষ। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে হাইস্ট্রীটের রেষ্টুরেন্ট সেক্টর থেকেই চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২৫ জন মানুষ চাকুরী হারিয়েছেন। এই সংখ্যা গত বছর ছিল মাত্র ৭শ ৫০ জনে। অন্যদিকে হাইস্ট্রীটের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এডমিনিস্ট্রেশনে যাওয়ার ফলে চাকুরী হারিয়েছেন আরো প্রায় ৯ হাজার ৯শ ৩৬ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮শ। আর খচর কমিয়ে একটি ব্যবসা বন্ধ করে আরেকটি রক্ষা করতে গিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯ হাজার ৮শ ৩০টি পদবী নাই হয়ে গেছে। এ ধরনের কাট গত বছরের চাইতে চলতি বছর প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে
সেন্টার ফর রিটেইল রিসার্চের এক গবেষণা রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, রেন্ট, রেইট এবং দৈনন্দিন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার ফলে হাইস্ট্রীট ব্যবসাতে গত কয়েক বছর ধরে ধ্বস নামতে শুরু করেছে। একই অবস্থার ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরো বিপুল সংখ্যক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মুখে পড়বে।
টয়েস আর আস এবং মাপলিনের কয়েকটি শাখা বন্ধের ফলে প্রায় ৫ হাজার মানুষ চাকুরী হারিয়েছেন। মাদারকেয়ার আরো ৪৯টি শাখা বন্ধের পরিকল্পনা করছে। এতে আরো প্রায় ৮শ মানুষ চাকুরী হারাবে। ফ্যাশন চেইন নিউলোক ইউকের ৫৮৩টি শাখার মধ্য থেকে ৬০টি বন্ধ করতে যাচ্ছে। এতেও আরো প্রায় ১ হাজার মানুষ চাকুরী হারাবেন। মার্ক এন্ড স্পেনসার ২০২২ সালের ভেতরে ইউকের প্রায় ১ হাজার শাখা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে পাউন্ড ওয়ার্ল্ড থেকে চলতি বছর আরো প্রায় ৫ হাজার ৩শ মানুষ চাকুরী হারাতে পারেন।
দ্যা ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম জানিয়েছে, উচ্চমূল্যের রেন্ট-রেইট এবং দৈনন্দিন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে ২০১৪ সাল থেকে প্রায় ৩ হাজার ২শ রিটেইলার শপ বন্ধ হয়েছে। দু’বছর আগে এই সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছিল, একই সমস্যার কারণে ২০২৫ সালের ভেতরে ব্রিটেনের এক তৃতীয়াংশ রিটেইলার শপ বন্ধ হয়ে যাবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে মনে করছে এই সংস্থাটি।