শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

ইস্টউড অ্যাওয়ার্ড ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে



হলিউড, বলিউড, ঢালিউড এ নামগুলির সাথে কম বেশী সবাই পরিচিত। এর সাথে নতুন ভাবে যুক্ত হয়েছে ‘ইস্টউড’। তবে এই ইস্টউড সম্পর্কে এখনও অনেকের ধারণা স্পষ্ট নয়, কারণ এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাত্র দু’বছর আগে। তা ছাড়া এটি কেন, কোথায়, কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ নিয়েও অনেককে প্রশ্ন করতে শুনেছি। তাই এ ব্যাপারে সম্যক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বৈকি। তদুপরীও আমি যেহেতু এবার ‘ইস্টউড অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেছি এবং সেটি আবার বছর সেরা কলামস্টি হিসাবে, তাই সেদিক থেকেও এ ব্যাপারে একটি কলাম লিখার দায়িত্ববোধ আমার উপর বর্তেছে বলে মনে করছি। এ জন্য ইস্টউড অ্যওয়ার্ড নিয়ে আমার আজকের কলাম।

‘ইস্টউড’ নিয়ে আলোচনার পূর্বে এর সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ‘উড‘ নিয়ে একটু আলোকপাত করতে চাই। ‘হলিউড’ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলচিত্র জগতের তীর্থস্থান। এটি ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলস শহরের একটি এলাকা। এখানে আমেরিকার চিত্র জগতের সকল গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। সারা বিশ্বে এখানকার সিনেমা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তাই এ কারণে হলিউডের নামের আদলে অন্যান্য দেশের চিত্র জগতের নামকরণ করা হয়ে থাকে। যেমন, ভারতের চিত্রজগতের প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে বোম্বে। তাই হলিউডের সাথে মিল রেখে এর নাম করণ করা হয়েছে ‘বলিউড’। এভাবে বাংলাদেশের চলচিত্র জগতের প্রধান কেন্দ্র ঢাকার নামকরণ হয়েছে ‘ঢালিউড’। আর এর সর্বশেষ সংস্করণ হচ্ছে ‘ইস্টউড’।

এখন প্রশ্ন হতে পারে, ইস্টউড তো সে ধরণের কোন প্রতিষ্ঠান নয় এবং এতে কোন চলচিত্র নির্মাণ করা হয় না। সুতরাং এ নামকরণ কতটুকু সঙ্গতিপূর্ণ। এ ব্যাপারে ইস্টউডের আয়োজকদের বক্তব্য হলো যেহেতু-এ সংগঠনটি বিলেতে বাঙালী কমিউনিটির মধ্যে মিডিয়া, মিউজিক, ড্রামা, কলামিস্ট, কালচারাল ও বিনোদন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিভিন্ন পেশায় যাঁরা মেধা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও কাজের স্বাক্ষর রাখছেন তাদের স্বীকৃতি ও সম্মাননা প্রদান করে, তাই সেই আদলেই এর নামকরণ হয়েছে। সাথে সাথে আমরা যেহেতু বিশ্বের পূর্ব প্রান্তের অধিবাসী তাই এর সাথে ‘ইস্ট’ শব্দটির সংযোজন বেমানান হয়নি বলেও তাঁরা উল্লেখ করেন। সুতরাং এ নামকরণটি যথার্থই হয়েছে।

এদিকে ইস্টউড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাত্র দু’বছর হয়েছে। গত বছরের চাইতে এবার আরো বেশী সংখ্যক অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। মডেলিং, মিডিয়া, ড্রামা, ড্যান্স, ফ্যাশন শো, ফটোগ্রাফি ও অন্যান্য ক্যাটাগরিতে মোট ৩৫টি অ্যাওয়ার্ড এবার দেয়া হয়েছে। গত ২৪ জুন ইস্ট লন্ডনের মে ফেয়ার ভেন্যুতে যারা বিভিন্ন বিভাগে এ পদক লাভ করেন তারা হলেন – প্রিন্ট মিডিয়াতে সেরা সাংবাদিক সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সেরা সাংবাদিক, চ্যানেল এস এর সিনিওর রিপোর্টার মুহাম্মদ জুবায়ের, সেরা কলামিস্ট দর্পণ সম্পাদক রহমত আলী, সেরা অনলাইন টিভি প্রেজেন্টার-এলবি ২৪ এর উপস্থাপক ও সানরাইজ টুডে সম্পাদক এনাম চৌধুরী, সেরা মহিলা নিউজ প্রেজেন্টার, চ্যানেল এস এর নাহিদ অদিতি, গীতিকার হিসাবে চ্যানেল এস এর নিউজ প্রেজেন্টার জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার, নিউজ কম্পজিশনে প্রপা আনোয়ার, মডেলিংয়ে মিরাজ খান রাজ ও জেরিন স্মৃতি, সঙ্গীতে হিমাংশু গোস্বামী, কৌতুক অভিনয়ে তসলিম আহমদ, প্রামান্য চিত্রে সায়েক আহমেদ সওদগর, বেতারে সেরা উপস্থাপক, জয়নাল খান ও তানজিলা জামান প্রমূখ।

এ বছর ইস্টউড অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীরা

প্রথমবার  অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ভারতে বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী বাপ্পী লাহিড়ী উপস্থিত থেকে সংগীত পরিবেশ করেন। আর এবার উপস্থিত ছিলেন, বিলেতে বাঙালী কমিউনিটির বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ। টিভি প্রেজেন্টার কুহিনুর’র উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন চ্যানেল এস এর চেয়ারম্যান আহমেদ-উস সামাদ জেপী প্রমুখ।

অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে যাঁরা তা প্রদান করেন তারা হচ্ছেন, চ্যানেল এস এর প্রতিষ্ঠাতা মাহি ফেরদৌস জলিল, নিউহাম কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ, প্রাইম এস্টেট প্রোপার্টির কর্ণধার কাজী আরিফ প্রমূখ।

ইস্ট উড অ্যাওয়ার্ড প্রতিষ্ঠাতা মিনহাজ কিবরিয়া বলেন, বিলেতের প্রায় ৭লাখের মত বাঙালীর বসবাস, যার একটি বড় অংশ এখানে জন্ম নিয়েছে ও বেড়ে উঠেছে। তাদের কাছে বাঙালী সংস্কৃতি তুলে ধরা নিতান্তই প্রয়োজন নতুবা তাঁরা তাদের শিখড়ের সন্ধান পাবে না। এ লক্ষ্যেই এ এওয়ার্ড প্রবর্তন করা হয়েছে। আগামীতে তা আরো বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে।

ইস্টউড এর চেয়ারম্যান বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সিরাজ হক বলেন, বিলেতের বাঙালী কমিউনিটিতে যাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন এ অ্যাওয়ার্ড তাঁদের কাজের স্বীকৃতি প্রদানে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এর ফলে তাদের ক্রিয়েটিভ কাজগুলি আরো উৎসাহিত হবে। তিনি বলেন, এর আয়োজন আগামীতে আরো ব্যাপক পরিসরে হবে। তিনি যারা স্পন্সর করেছেন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান।

এদিকে এ অনুষ্ঠানের পর থেকে এ নিয়ে কমিউনিটিতে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে অনেকে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন। তাই ধারনা করা যায় এটি ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

লেখক : যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক, ইস্টউড অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত কলামিস্ট ও সম্পাদক মাসিক দর্পণ।

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!