বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

বিজয় নিশ্চিত জেনে পানসীতে লাঞ্চ সারছিলেন কামরান!



দিন শেষে কামরানের এই হাসি আর থাকেনি। নৌকার স্মরণকালের সেরা সময়ে তাঁকে টানা দ্বিতীয়বার হারতে হয় আরিফুল হকের কাছে।

সকাল থেকেই সিলেট শহরে জোর গুজব। চারিদিকে নৌকা প্রতিকে ভোট পরছে। নিয়ম অনিয়ম সবকিছুকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে এগিয়ে যাচ্চে নৌকা। দুর্বার তার গতি। এবার আর আটকানোর সাধ্য নেই কারোর!
সিলেটে নৌকার কান্ডারি বদর উদ্দিন কামরান। চমৎকার রৌদ্রজ্জ্বল দিনে তাঁর চেহারায় পুরনো সেই ঝলক। মিডিয়ার সামনে মুখোমুখিতে আত্নবিশ্বাস ঠিকরে বের হচ্ছিল চোখ মুখ থেকে।

পাঁচ বছর পর মেয়রের চেয়ারে কামরানের পুনরায় বসাটা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। শুধু অপেক্ষা ছিল মাঝের কয়েকটি ঘন্টা পার হওয়ার । কামরান ছিলেন তাই বেশ রিল্যাক্সড। বাতাস বুঝে ফেসবুকে অনেক নেতা-কর্মী তাঁর সাথে সেলফি তুলে দিচ্ছিলেন “অগ্রীম অভিনন্দন মেয়র সাহেব” লিখে।

অপরদিকে আরিফের শুভাকাংখীরা আসন্ন পরাজয়ের আতংকে ছিলেন নীল। তাদের ফেসবুক ভাসছিল জালভোট অরাজকতা আর দুর্নীতির হাহাকারে। কামরান পুত্র শিপলুও কেন্দ্রে কেন্দ্রে হাসিমুখে ছবি তুলছিলেন। পিতার আসন্ন বিজয়ের সুভাসে তিনিও ছিলেন ঝলমলে। বিপরীতে তখন জনগনের কাছে মিডিয়ায় অভিযোগ করে বিচার চেয়ে যাচ্ছিলেন আরিফ। বলছিলেন পুন্যভুমিতে অনাচার আল্লাহ সহ্য করবেন না।

দুপুর তিনটার কিছু আগে নিজের বিজয় নিশ্চিত জেনে দুপুরের খাবার খেতে পানসীতে যান কামরান। সংগে ছিলেন প্রায় ৪০ জনের মত নেতাকর্মী । অপেক্ষা ছিল হয়ত বিজয় মিছিলের!

কিন্তু বিধিবাম ! শেষ মুহুর্তে পালটে যায় ভোটের হিসাব। দিনে “নৌকা” জোয়ারের গল্প, রাতে ভেসে যায় ভাটায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আরিফের কাছে ৪ হাজার ৬২৬ ভোটের ব্যবধানে পিছিয়ে থাকেন কামরান। অথচ ভোটের দিনের আবহাওয়ায় মনে হচ্ছিল এবার হয়তো স্মরনকালের সবচেয়ে বেশি ভোট পেতে যাচ্ছেন দুবারের মেয়র কামরান।

সেই ভরসায়ই হয়ত দুপুরের খাবার সারতে বিরাট বহর নিয়ে জিন্দাবাজারস্থ পানসী রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন কামরান। আনন্দ উদ্দিপনার মাঝে লাঞ্চ সারেন সবাই। বিল হয় ৮ হাজার টাকার কিছু বেশি। খাওয়া শেষে ব্যাংকের কার্ডে পেমেন্ট করা হয় কামরানের বিল। এ সময় তাদের সার্ভ করেন পানসীর প্রায় ১০ জন ওয়েটার। তবে বিল বিশাল হলেও তারা মেয়র পদপ্রার্থী কামরানের কাছ থেকে কোন টিপস পাননি। পানসীর একজন ওয়েটার বলেন ” স্যারকে বেশ উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল, যদিও তিনি আমাদের সাথে তেমন কোন কথা বলেননি”। এসময় কামরান ছিলেন জয়ের নেশায় বুদ।

তবে রাতেই মোহভংগ হয় তাঁর। নৌকার স্মরণকালের সেরা সময়ে তাঁকে টানা দ্বিতীয়বার হারতে হয় আরিফুল হকের কাছে। জলাঞ্জলি দিতে হয় পুনরায় সিলেটের মেয়র হওয়ার স্বপ্ন। মাঝে মাঝে সকালের সুর্য সব সময় পুরো দিনের হিসাব বলতে পারেনা।

হাসান মোঃ শামীম : সাংবাদিক

শেয়ার করুন:

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

error: Content is protected !!