গোয়েন্দা সূত্রমতে, ২০০৪-০৫ সালে নিয়োগ পাওয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তাদের মধ্যে ৯ জনকে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, ২৯ জনকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আওতাধীন উপসচিব/পরিচালক/সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং ৩৭ জনকে সিনিয়র সহকারী সচিব/উপপরিচালক/ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা/অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
গত ৪ অক্টোবর জারি করা প্রজ্ঞাপনে পদোন্নতিপ্রাপ্তরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবেন এমন খবরে সরকারের একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করে। সপ্তাহব্যাপী তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যমতে ওই ৭৫ জনের মধ্যে ৭ জন সুযোগ সন্ধানী সুবিধাবাদী এবং বাকি ৬৮ জনের মধ্যে অধিকাংশ সরাসরি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। অনেকে ছিলেন ২০০৩ সালে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি এবং বিভিন্ন হল কমিটির নেতা। ওই সময়ে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন হাসান মামুন এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাইফুল ইসলাম ফিরোজ। ছাত্রদল জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় কমিটির প্রভাবশালী পদে থাকা অনেক নেতাও পদোন্নতি পেয়েছেন। এ ছাড়া কয়েক জন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন।
সূত্র আরো জানায়, ২০০৪ সালের আগে ২০০৫ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় ২০০৪ সালের বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে দুই দফায় নিয়োগ দেয়া হয়। এতে জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি নিয়ে দুই ব্যাচের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ২০০৫ ব্যাচের কর্মকর্তারা এ নিয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন, যা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। পদোন্নতিতে ৭৫ জনকে বাছাই নিয়ে ওই দুই ব্যাচের মধ্যেই অভিযোগ রয়েছে, যা গোয়েন্দারা তদন্তে সহায়ক তথ্য হিসেবে মনে করছেন।
এদিকে জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে বোল পাল্টে নিজেদের আওয়ামী লীগ ঘরানার লোক বলে প্রচারে নামেন। সহপাঠী বা এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরে অনেকে সরকারের বন্দনায় নামে। চেষ্টা তদবির করে তারা পছন্দের সুবিধাজনক স্থানে বদলি হন এবং পদোন্নতি লাভ করেন।