বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের হরিশ্যাম গ্রামে গত ২২ অক্টোবর (সোমবার) দিবাগত গভীর রাতে একটি পাকা বসতগৃহে হামলা, ভাঙচুর এবং বাসিন্দাদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৭জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের ৫জন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন, আব্দুল কাদির (৫৫), আইয়ুব আলী (৩৫), সাহেদ আহমদ (২২), আব্দুল কুদ্দুছ (২৫) এবং ফয়ছল আহমদ (২২)। বালাগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ এসএম জালাল উদ্দিন হামলা এবং বসতগৃহে ভাঙচুরের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার স্থানীয় পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের হরিশ্যাম (উত্তর) গ্রামের দুই প্রতিবেশী হাজী আব্দুল খালিক এবং আব্দুল কালাম গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। বিশেষ করে আব্দুল খালিকের নির্মাণাধীন বসতগৃহকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষে মালিকানা দাবি নিয়ে ইতোপূর্বে মামলা, হামলার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত সোমবার দিবাগত গভীর রাত আনুমানিক ৩টার দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন হাজী আব্দুল খালিকের পাকা বসতগৃহে হামলা করে। হামলাকারীরা ভবনের ছাদে উঠে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ছাদের অন্তত ১৪টি স্থানে ফুটো করে দেয় এবং ভবনে বিভিন্ন অংশে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এসময় বসতগৃহে থাকা গৃহকর্তা হাজী আব্দুল খালিক-সহ তার পরিবারের লোকজনকে লক্ষ্য করে হামলাকারীরা ধারালো ‘অস্ত্রশস্ত্র’ দিয়ে আঘাত করে। এসময় হট্টগোল শুনে স্থানীয় পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মধু-সহ এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সংবাদ পেয়ে রাতেই বালাগঞ্জ থানার এসআই কামরুল হুসাইনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
হামলার শিকার গৃহকর্তা হাজী আব্দুল খালিক, তার ছেলে সুন্দর আলী, মেয়ে রিনা বেগম অভিযোগ করেন, তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কালামের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন লোক গভীর রাত আনুমানিক ৩টার সময় তাদের পাকা বসতঘরে হামলা করে। এসময় হামলাকারীরা তাদের ঘরের ছাদের অন্তত ১৪টি স্থানে ফুটো করে দিয়েছে। পাশাপাশি ধারালো অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় কমপক্ষে ৭জন আহত হয়েছেন। ‘হামলাকারীরা গৃহে থাকা লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে এবং তাদের হটিয়ে বাড়ির দখল নেয়ার চেষ্টা করেছে’ বলে তারা অভিযোগ করেন। তারা বলেন, ‘আমাদের সৌরবিদ্যুতের সোলার, দেয়ালসহ ভবনের বিভিন্নস্থানে তারা হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে’।
এ বিষয়ে আলাপকালে পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মধু হামলার বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হামলার সময় কয়েক দফা গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে হামলা এবং গুলি বর্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আব্দুল কালাম এ ঘটনার সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, এ হামলা এবং গুলি বর্ষণের ঘটনার সাথে তারা জড়িত নন। তিনি দাবি করেন, গত কয়েকদিন যাবত তিনি রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছেন। বিস্তারিত জানেন না।
বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ এসএম জালাল উদ্দিন আলাপকালে আব্দুল খালিকের বসতগৃহে হামলার ঘটনার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেছেন। গুলি বর্ষণের বিষয়ে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।