এ নিয়ে সবশেষ সাত টেস্ট ইনিংসে দুইশ করতে পারল না বাংলাদেশ। এর ছয়টিতেই ছুঁতে পারেনি দেড়শ। তবু জিম্বাবুয়ে বলেই এই ইনিংস যেন বেশি বিব্রতকর।
অথচ দিনের প্রথম সেশনটি ছিল বাংলাদেশের। তাইজুল হোসেনের স্পিন ঝলকে জিম্বাবুয়ে শেষ ৫ উইকেট হারায় ২১ রানের মধ্যে। কিন্তু বোলিংয়ের স্বস্তি লাঞ্চের পর রূপ নেয় ব্যাটিংয়ের হতাশায়। দুই সেশনে পাঁচটি করে উইকেট হারিয়ে বিধ্বস্ত দলের ব্যাটিং।
সবচেয়ে বড় হতাশা, ১০ উইকেটের একটিতেও উইকেট নেওয়ার মতো দারুণ কোনো ডেলিভারি করতে হয়নি জিম্বাবুয়ের বোলারদের। উইকেটে তেমন প্রাণ ছিল না, জিম্বাবুয়ের বোলিং আক্রমণও নয় খুব ধারাল। কিন্তু নিজেরা আত্মঘাতী হলে পতন ঠেকাবে কে! শুরুর ইমরুল কায়েস থেকে শেষের আবু জায়েদ চৌধুরী, সবাই ছিলেন একই পথের পথিক।
জিম্বাবুয়ের দুই পেসার মিলে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। এমনকি সিকান্দার রাজার সাদামাটা স্পিনেও বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে তিন উইকেট।
চা-বিরতির পর তাসের ঘরের মতো উইকেট পড়তে থাকে বাংলাদেশ দলের। দলীয় ২০ রানের আগেই চার উইকেট পড়ে যায় বাংলাদেশের। দারুণ ফর্মে থাকা ইমরুল কায়েস করেছেন মাত্র পাঁচ রান। আরেক দারুণ ফর্মে থাকা লিটন কুমার দাস করেছেন মাত্র ৯। নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হয়েছেন পাঁচ রানে। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তো কোন রানই যোগ করতে পারেননি নিজের নামের পাশে।
মুমিনুক হক ও মুশফিকুর রহিম কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও সেটি থেমে যায় দলীয় ৪৯ রানে। ব্যক্তিগত ১১ রান করে সিকান্দার রাজার বলে আউট হন তিনি। চা-বিরতির আগে পাঁচ উইকেটে ৭৪ রান নিয়ে দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষ করে। তবে চা-বিরতির পরেই দলীয় ৪ রান যোগ করতেই জার্ভিসের করা বাউন্স বুঝতে না পেরে কিপার চাকাভার হাতে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিক।
আউট হওয়ার আগে ৫৪ বলে ৩১ রান করেন মুশফিক। তার বিদায়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা চালিয়ে যান আরিফুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তাকে নিয়ে ৩০ রানের জুটি গড়েন আরিফুল। ব্যক্তিগত ৩৩ বলে ২১ রান করে উইলিয়ামসের বলে আউট হন মেহেদী হাসান। মিরাজের বিদায়ে আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। তারপর দলকে একাই টেনে দায়িত্ব উঠে অভিষিক্ত আরিফুলের কাঁধে। তাইজুলের সঙ্গে ২৩ রানের জুটি এবং নাজমুল অপুর সঙ্গে ১২ রানের জুটি গড়েন তিনি।
কিন্তু দিনের শেষ বেলায় আরিফুল-আবু জায়েদের ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন আবু জায়েদ। ফলে আরিফুলের লড়াকু ইনিংস শেষ হয় ৪১ রানে অপরাজিত থেকেই। দ্বিতীয় ইনিংসে, দ্বিতীয় দিনে মাত্র দুই ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পায় জিম্বাবুয়ে। আলো সল্পতার কারণে বেশিক্ষণ গড়ায়নি মাঠে। ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪০ রানের লিড নিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট হাতে রেখে দ্বিতীয় দিন শুরু করে জিম্বাবুয়ে। পিটার মুরের অপরাজিত ৬৩ রানে ২৮২ রানে ইনিংস থামে জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশের হয়ে ছয়টি উইকেট লাভ করেন তাইজুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৮২
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫১ ওভারে ১৪৩ (লিটন ৯, ইমরুল ৫, মুমিনুল ১১, শান্ত ৫, মাহমুদউল্লাহ ০, মুশফিকুর ৩১, আরিফুল ৪১*, মিরাজ ২১, তাইজুল ৮, অপু ৪, আবু জায়েদ ০; জার্ভিস ১১-২-২৮-২, চাটারা ১০-৪-১৯-৩, মাভুটা ৬-০-২৭-০, রাজা ১২-২-৩৫-৩, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৮-২-২১-০, উইলিয়ামস ৪-০-৫-১)
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ২ ওভারে ১/০