তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বদলা নেওয়া আর হলো না। এ বছরই বাংলাদেশ সফর করতে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে। টেস্ট সিরিজে স্বাগতিক দলের দাপটে দুমরেমুচড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে জয় পেয়েছিল সফরকারীরা। বাংলাদেশ সফরে এসে টেস্ট সিরিজেও একই দৃশ্য, স্বাগতিক দলের দাপট। টেস্টে বাংলাদেশের দাপটের পর ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা শুনিয়েছিলেন অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজেও হেরে বসল উইন্ডিজরা।
আজ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ১৯৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতে ওপেনার লিটন দাসের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৪৫ রানে কিমো পলের ডেলিভারিতে উইন্ডিজ অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। তবে এতে কোনো বিপদ ঘটতে দেননি আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল ও ওয়ান ডাউনে নামা সৌম্য সরকার। দুজনে মিলে দলকে নিয়ে যান জয়ের খুব কাছে। দ্বিতীয় উইকেটে ১৩১ রানের দারুণ পার্টনারশিপ গড়ার পর সৌম্য বিদায় নেন ব্যক্তিগত ৮০ রানের মাথায়। ৮১ বলের এই ইনিংসে ছিল ৫টি করে চার ও ছক্কা।
সৌম্য বিদায় নিলেও বিলম্ব হয়নি বাংলাদেশের জয়। নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ফিফটি করা তামিম তুলে নেন সহজ জয়। ৯টি চারের সাহায্যে ১০৪ বলে ৮১ রান করে অপরাজিত থাকেন তামিম, যা দলের পক্ষে ইনিংসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। তার সঙ্গী মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। বাংলাদেশ জয় পায় ৮ উইকেট ও ৬৯ বল বাকি থাকতেই।
এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ এদিন শুরু থেকেই চেপে ধরে উইন্ডিজকে। দলীয় ১৫ রানে চন্দরপল হেমরাজকে মোহাম্মদ মিঠুনের ক্যাচে পরিণত করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর ধীরভাবে খেলা ড্যারেন ব্রাভোকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার শাই হোপ। তবে ১০ রান করে ব্রাভো মিরাজের শিকার হয়ে বিদায় নিলে ধ্বস নামে উইন্ডিজের ব্যাটিং অর্ডারে। ১ উইকেটে ৫৭ রান থেকে দলটির স্কোরবোর্ড রূপ নেয় এমন- ৯৯-৫। মিরাজ আরও দুটি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন একটি উইকেট শিকার করে সফরকারীদের অর্ধেক উইকেটের পতন ঘটান।
তবে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান হোপ। তাকে সাজঘরে ফেরাতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন টাইগাররা, ফলে নিজের স্কোরকে বড় করার পাশাপাশি দলের বিপর্যয় প্রতিরোধে লড়তে থাকেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। রস্টন চেজকে সাজঘরে ফিরিয়ে সাকিব বাংলাদেশ দলকে এনে দেন স্বস্তি।
দলীয় ১৭১ রানে সাকিবের শিকার হয়েই সাজঘরে ফেলেন ফাবিয়ান অ্যালেন। এর কিছুক্ষণ পর কিমো পলকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপর দেবেন্দ্র বিশুকে সাথে নিয়ে পূর্ণ ৫০ ওভার খেলেই মাঠ ছাড়েন দারুণ ইনিংস খেলা হোপ।
উইন্ডিজের পক্ষে হোপের ব্যাট থেকেই আসে সর্বোচ্চ ১০৮ রান (১৩১ বল, ১০টি চার ও ১টি ছক্কা)। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে ম্যারলন স্যামুয়েলসের ব্যাট থেকে- মাত্র ১৯। পুরো ব্যাটিং অর্ডারে দুই অঙ্কের রানের দেখা পেয়েছেন মাত্র চারজন ব্যাটসম্যান! বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ চারটি, সাকিব আল হাসান এবং মাশরাফি বিন মুর্তজা দুটি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন একটি উইকেট শিকার করেন।